আমাদের চারপাশ জুড়ে কত না গাছের সমারোহ। মনভুলানো সবুজের হাতছানি। গাছগুলো ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে এক জায়গায়। বাতাসে ডালপালা দোলে। খসে পড়ে শুকনো পাতা। আমরা তাদের কোনো কথা শুনতে পাই না। তবু তারা বেড়ে ওঠে। সবুজের মাধুরী ছড়ায়। আবার একসময় বুড়ো হয়। মারা যায়। কখনো জীবন্ত অবস্থায় মানুষের কুডুলের আঘাতে লুটিয়ে পড়ে মাটিতে। এই গাছেরা নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকলেও এদের কিন্তু জীবন আছে, অনুভূতি আছে- একথা অনেক আগেই প্রমাণ করে গেছেন আমাদের দেশের এক বিখ্যাত বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসু। কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে, গাছেরা একে অপরের সাথে কথাও বলে; বিপদের আশংকা দেখলে আশপাশের গাছবন্ধুদের আগেভাগে সতর্ক করে দেয়- আমাদের আবহাওয়া বিভাগ যেমন বন্যা, জলোচ্ছ্বাস বা ঘুর্ণিঝড়ের সংকেত দিয়ে মানুষকে সাবধান করে, তেমনি। তো, গাছ কীভাবে একে অপরকে বিপদ-সংকেত পাঠায়? জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী পরীক্ষা করে দেখেছেন- জাপানের লিমা শিমগাছ কীভাবে মাকড়সা, লাল-মাকড়সা আর ক্ষুদ্র পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচার ব্যবস্থা করে এবং এ বিষয়ে অন্য গাছদেরকেও সতর্ক করে দেয়। তবে উচ্চশব্দ করে নয়; শিমগাছ বিপদ-সংকেত দেয় নীরবে, অত্যন্ত নিঃশব্দে- এক বিস্ময়কর পন্থায়।
মুস্তাফা মাসুদের জন্ম ১৯৫২ সালে, যশােরে । বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ তেত্রিশ বছর পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরির পর অবসর জীবন যাপন করছেন।। মূলত শিশুসাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতিমান হলেও বড়দের উপযােগী গবেষণা-প্রবন্ধ ও গ্রন্থ রচনা, অনুবাদ ইত্যাদি ক্ষেত্রেও তিনি দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। বাংলা একাডেমি, শিশু একাডেমীসহ দেশের খ্যাতনামা বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকাশিত তাঁর বইয়ের সংখ্যা বত্রিশটি। এসব বইয়ের মধ্যে রয়েছে: যশােরের লােকসাহিত্য, অসত্যের কালােমেঘ, স্বাধীনতা প্রিয়। স্বাধীনতা, ভালােবাসি আকাশটা নীল নীল, গল্পগুলাে মুক্তিযুদ্ধের, কুমড়াের পেটে সাতভাই, ম্যাও বাবু ও লিথিমণি, ভূত বাহিনীর কাণ্ড, আকাশ পরীর গল্প, রূপকথার ঝুলি, চলে এসাে রূপকথার দেশে, জানার আছে কতকিছু, কালাভূতের সাঙ্গোপাঙ্গ, সােনালি বিড়াল, মিষ্টি ছড়া মজার ছড়া, হাজী মােহাম্মদ মােহসীন ইত্যাদি। তিনি অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৪০৫) অর্জন করেন। সৃজনশীলতা, দেশপ্রেম, অসাম্প্রদায়িক মানবতাবাদী চেতনা এবং শুভ ও কল্যাণবােধের স্ফুরণই তার সাহিত্য সাধনার মূল লক্ষ্য।