"তিন মাস্কেটিয়ার" বইয়ের পিছনের কভারের লেখা: বছরটা ছিলাে ১৮০৭ সাল । পাঁচ বছর বয়সেই আলেকজান্ডার দ্যুমা জানতেন ছােট্ট শহর ভিলার্সকটেরেটসে অন্য যেসব ছেলে আছে তাদের চেয়ে আলাদা তিনি। এর কারণ দমা ছিলেন অর্ধেক কালাে অর্ধেক সাদা। এবং এই তিক্ত বিষয়টা কেউ তাঁকে কখনও ভুলতে দিতাে না। পড়াশােনা করতে একদম ভালাে লাগত না ছােট্ট দ্যুমার। যতাে বড় হতে লাগলেন ততােই বাইরে বাইরে ঘুরে বেড়ানাে আর শিকার করার নেশা পেয়ে বসল তাকে। তবে ষােলােতে পা দেওয়ার পর তাঁর গােটা জীবন বদলে গেল। জীবনে এই প্রথম একটা নাটক দেখলেন দ্যুমা শেক্সপিয়ারের হ্যামলেট। সেই মুহূর্ত থেকে তার স্বপ্ন হয়ে দাঁড়াল প্যারিসে যাওয়া, এবং একজন নাট্যকার হওয়া। বছরের পর বছর কেরানির চাকরি করেছেন দ্যুমা, অবসর সময় ব্যয় করেছেন নাটক রচনায়। নাটক আর ভ্রমণকাহিনি লিখে ভালােই সাফল্য পান তিনি। তবে বিশেষ একধরনের গল্প বিরাট জনপ্রিয়তা পায় ১৮৪৪ সালের দিকে, যা তাকে প্রচুর অর্থ এবং বিপুল খ্যাতি এনে দেয়। সেগুলাে ছিলাে ঐতিহাসিক উপন্যাস। তার অনেক ঐতিহাসিক উপন্যাসে দ্যুমা এমন সব চরিত্র নিয়ে এসেছেন ফরাসি জাতির ইতিহাসে যাদের বাস্তব অস্তিত্ব আছে, এবং এমন সব ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন যেগুলাে সত্যি সত্যি ঘটেছে। এর সঙ্গে তিনি যােগ করেছেন নিজের কল্পনা করা গুরুত্বপূর্ণ সব চরিত্র, এবং তাদেরকে দিয়ে সৃষ্টি করেছেন মনভােলানাে মজাদার সব অ্যাডভেঞ্চার কাহিনি। দ্যুমার ঐতিহাসিক উপন্যাসের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তিনটি হলাে থ্রি মাস্কেটিয়ার্স, দা কাউন্ট অব মন্টি ক্রিস্টো, দা ম্যান ইন দি আইরন মাস্ক । দ্যুমা তার সারা জীবনে ছ’শরও বেশি বই লিখেছেন, সংখ্যার দিক থেকে এটা জীবিত বা মৃত যেকোনাে মানুষের চেয়ে বেশি। ওগুলাে থেকে প্রচুর আয় করেছেন তিনি। তবে তার ঝোক ছিলাে একের পর এক রাজকীয় অট্টালিকা তৈরি করা, প্যারিসের বিখ্যাত সব শিল্পী আর লেখকদের মনােরঞ্জনের পেছনে অঢেল খরচ করা, খেয়ালের বশে খবরের কাগজ আর থিয়েটারের মালিকানা কেনা। যে ব্যক্তি তার এত সব অমূল্য বই দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন গােটা পৃথিবীকে, ১৮৭০ সালে মারা যাওয়ার সময় তার কাছে একটা ফুটো পয়সাও ছিলাে না!
পশ্চিমবঙ্গের হুগলিতে জন্ম। চার বছর বয়সে বাংলাদেশে আসেন। পেশা : লেখালেখি অসংখ্য গোয়েন্দা উপন্যাস লিখেছেন ও অনুবাদ করেছেন। কর্মজীবনের প্রায় পুরোটাই সেবা প্রকাশনীতে লেখালেখির কাজে ব্যয় করেছেন। দীর্ঘ বহুবছর।