"গল্পসমগ্র -১" ফ্ল্যাপে লেখা কথা: কখনাে প্রতিটি ঘর দেখতে এক হয়। বাইরে থেকে সবার পদচারণাও একইরকম দেখতে হয়। কিন্তু ভেতরের কাহিনী হয় একেবারে স্বতন্ত্র। তাই একইরকম মনে হওয়া এই গল্পগুলােও তেমনি। তবু এতে মর্ম থেকে ফেনিয়ে ওঠা বেদনায় কেউ এরা এ দিগ্বিদিক হারায় না। বেদনাকে বর্তিকা করে, অপ্রাপ্তিকে ছাপিয়ে গল্পের প্রতিটি চরিত্রের স্বকীয়-বৈশিষ্ট্য পাঠক মনে ব্যাপকভাবে দ্যোতনা সৃষ্টি করে। মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রভাবিত গল্পগুলাে নতুন প্রজন্মকে চিনিয়ে দেবে তার পূর্বসুরির রক্ত ও চেতনার তেজ। যেকোনাে ঘটনা অথবা আবহ, অথবা বাস্তবতা বিবর্জিত কোনাে বিষয়ও যখন লেখকমনে গল্প হয়ে উঠতে চায়, স্বয়ং বিধাতা তাতে প্রাণ না দিলে গল্পটি প্রাণবন্ত হবে! অতএব লেখক তখন হয়ে ওঠেন ঈশ্বরের অংশ। আর সে প্রাণের উত্তাপ লেখকের নিজের চেয়ে পাঠকেরই টের পাবার কথা বেশি। অতএব যা পাঠকের জন্য ঢেলে সাজানাে হলাে, তা নিয়ে লেখকের হয়ে উচ্চবাচ্চ না করাই শ্রেয়। তবু বলতে হয়, রেবতী, নূপুর, হুরমত মােল্লা, শাহানা, ময়েজউদ্দিন, হাসনাহেনা, রােহিনী, তসিরন, কবিরুল, জমিরউদ্দিন, রেহানা, জরিনা এরা সবাই আপনাদের চেনা। দীলতাজ রহমান তার পাঠককে চেনাতে চেয়েছেন পারিবারিক জীবনে, তথা সামাজিক পটভূমিতেও এদের ভূমিকাটুকু।
দীলতাজ রহমানের জন্ম ১৯৬১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর গােপালগঞ্জ জেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামে। মা রাহিলা বেগম, বাবা সূফী ভূইয়া মােহাম্মদ জহুরুল হক। ব্যক্তিগত জীবনে দীলতাজ রহমান আশিক, ফারহানা, ফারজানা , আরিফ- চার সন্তানের জননী। আর এদের বাবা এ.কে ফজলুর রহমান ছিলেন রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার। ফেনী জেলার সােনাগাজী থানাধীন ধলিয়া মৌলবিবাড়ির বউ দীলতাজ রহমানের শ্বশুর ডাক্তার তফাজ্জল আহম্মদ। শাশুড়ি একই বাড়ির বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ মৌলবি আবুল বাসার ওসমান। গণির কন্যা করিমননেসা। দীলতাজ রহমান বিট মাস্কট প্রাইভেট লিমিটেড-এর (সফটওয়্যার ফার্ম) চেয়ারম্যান। কবিতা দিয়ে লেখালেখি শুরু করলেও, ক্রমে পাঠকমহলে দীলতাজ রহমানের গল্পই ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। গল্প নির্মাণে যে পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার পরিচয় তিনি দেন, প্রতিটি গল্পের সাথে জীবনের যে ঘনিষ্ঠতা তিনি ফুটিয়ে তােলেন, তাতে শুধু। ভালােলাগা নয়, পাঠককে অবাক করেও ছাড়েন।