মিলন বনিকের লেখা ‘ছোট্ট রাজার গল্প’ বইটি মানবিকতা ও বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে রচিত। বইটিতে মাত্র চারটি গল্প রয়েছে। ৪০ পৃষ্ঠার এ বইটিতে যে চারটি গল্প রয়েছে সেগুলো হলো―ছোট্ট রাজার গল্প, মায়ের জন্য ভালোবাসা, ফাঁদ এবং বাঁশের বাঁশি। প্রথম গল্পের নামেই বইটির নামকরণ হয়েছে। রাজা একটি হারিয়ে যাওয়া কিশোর। বাবার সাথে ট্রেনে যাওয়ার সময় ট্রেনে ডাকাতের হামলা হয়। ডাকাতরা রাজাকে ট্রেন থেকে ফেলে দেয়। অসুস্থ রাজা জ্ঞান ফিরে দেখে সে একটি হাসপাতালে ভর্তি। এর পর থেকে রাজা হাসপাতালেই থাকে। আর হাসপাতালের রোগীদের দেখাশোনা করে। যার যেটুকু প্রয়োজন তার জন্যই সে ততটুকু করে। কিন্তু রাজার মন খারাপ হয় তার পরিবারের কথা মনে করে। রাজা অপেক্ষা করে, একদিন তার বাবা এসে তাকে নিয়ে যাবে। ‘মায়ের জন্য ভালোবাসা’ গল্পটি খুবই একটি বেদনাদায় গল্প। অনেক শিশু-কিশোরের ছোটবেলায় মা মারা যায়। মায়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে অনেক সন্তান। তারা সারাজীবন বয়ে বেড়ায় মা না থাকার যন্ত্রণা। কিন্তু অনেককেই আবার সৎমায়ের কাছে থাকতে হয়। সৎমা অনেকের ভালো হয়। কিন্তু অনেক সৎমা রয়েছে, যারা আপন করে নিতে পারে না। পদে পদে তাদের ওপর নানা রকম অত্যাচার-নির্যাতন চালায় কারণে-অকারণে। ‘মায়ের জন্য ভালোবাসা’ তেমনি এক সৎমাকে নিয়ে লেখা গল্প। বন্ধুরা তোমরা হয়তো একটু অবাক হচ্ছো এ আবার কেমন গল্প! গল্প তো হবে রাজা-রানি, ভূত-পেতনিদের নিয়ে। আসলে কাল্পনিক গল্প যেমন আছে তেমনি বাস্তব জীবনের গল্পও আছে। ছোটবেলা থেকে যদি এই জীবনের বাস্তবতাকে জেনে বুঝে মোকাবেলা করে বড় হওয়া যায় তবে জীবন হয় অনেক সুন্দর। অল্পতেই ভেঙে পড়তে হয় না। জীবনের সাথে লড়াই করে বাঁচতে শেখার নামই শিক্ষা। ‘ফাঁদ’ এবং ‘বাঁশের বাঁশি’ গল্প দুটোও অনেক চমৎকার। প্রতিটি গল্পের সাথে আছে ছবি। ছবিগুলো গল্পগুলোকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলেছে। মানবিকতার পাঠ নিতে ও প্রকৃত মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে এসব গল্প আমাদের বেশি বেশি পাঠ জরুরি। বইটি উপহার হিসেবে ও পাঠাগারে সংগ্রহের জন্য রাখা যেতে পারে।