রাজা-রানি, রাজপুত্র-রাজকন্যাদের গল্প শুনতে সবাই আমরা ভালোবাসি। বিশেষ করে রাজকন্যাদের গল্প শুনতে তো পড়াশোনা বাদ দিয়ে বসে পড়ি বড়দের কাছে। রাজকন্যার মন খারপ; কেউ তার মন ভালো করতে পারে না, রাজকন্যার জন্য বিয়ের পাত্র নির্বাচন করা হবে কিন্তু কোনো পাত্র খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাজকন্যাকে এক দৈত্য এসে তুলে নিয়ে গিয়ে এক পাহাড়ের গুহায় রেখে দিয়েছে―এমন গল্প কত যে আমরা শুনেছি তার ঠিক নেই। কিন্তু তবুও এসব গল্প কেন যেন বারবার শুনতে, পড়তে মন চায়। রাজকন্যা নিয়ে আরো একটি মজাদার গল্প পড়া যাবে দীপালী ভট্টাচার্যের লেখা ‘রাজকন্যা’ গল্পের বইটিতে। কিশোর উপযোগী ১২টি গল্প রয়েছে এ বইটিতে। ‘রাজকন্যা’ বইটির প্রথম গল্প এবং এ গল্পের নামেই বইয়ের নামকরণ হয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে রাজপুত্রের ঢোল, সাপের মণি, মামার বাড়ি, সোনার তালা রুপোর চাবি, ভূত, সোনাব্যাঙ, বীথি ও তার বন্ধু গাছ, মালি ও জমিদার, চাষার মেয়ে রানি, অনাবিল ও অপরূপ এবং বাঁদর ও শেয়ালের গল্প; শিরোনামের গল্প। দীপালী ভট্টাচার্যের লেখা সাবলীল ও আকর্ষণীয়। গল্প শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাঠকদের ধরে রাখার মতো তার লেখনীর দক্ষতা লক্ষণীয়। শিশু-কিশোরদের জন্য যারা লেখেন তাদের অনেক সচেতন ও কৌশলী হতে হয়। শিশু-কিশোরদের মতো করে লিখতে হয়, তা না হলে তারা বুঝতে পারে না। ‘রাজকন্যা’ গল্পটি একটি কাল্পনিক গল্প। ‘ভাবনাপুর রাজ্যের রাজা রঙ্গরাজ। তার অনেক সম্পদ কিন্তু তার কোনো সন্তান নেই! এই নিয়ে রাজা এবং রানির দুঃখের অন্ত নেই। একদিন রানি স্বপ্ন দেখতে পায় অমাবস্যা রাতে যদি একটা নাবালক একটি লাল গোলাপ এনে রানিমার দুহাতে তুলে দিতে পারে তাহলে তার একটা কন্যাসন্তান হবে। এ স্বপ্নের কথা ছড়িয়ে পড়ল সারা রাজ্যময়। অনেকেই এসে রানিমার হাতে লাল গোলাপ দিল কিন্তু সেই গোলাপগুলো হয়ে গেল কালো গোলাপ! অবশেষে এক কৃষকপুত্রের দেয়া একটি গোলাপে রানিমা পেল এক ফুটফুটে রাজকন্যা।’ এ বইয়ে প্রতিটি গল্পই আকর্ষণীয় ও নতুন। বইটির প্রকাশকাল ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। বইটির ছাপা, বাঁধাই, কাগজ খুবই চমৎকার। প্রতিটি গল্পের সাথে রয়েছে শিল্পীর আঁকা ছবি। গল্পপ্রিয় পাঠকমহলে একটি প্রিয় গল্পের বই হিসেবে বইটি স্থান পাবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়।