পূর্বসূরিগণ : স্মরণ সত্তা মনন আমাদের শিল্প-সাহিত্য ভুবনে আহমাদ মাযহারের চিন্তাদীপ্ত অবলোকনের সাক্ষ্য। ব্যক্তির বিচিত্রবিধ কৃতির সূত্রে তিনি বৃহত্তর বাঙালি মনীষার স্বরূপ উদ্ঘাটনে ব্রতী। বিষয় নির্বাচনে লেখক সমগ্রতাবাদী। তাই রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-বুদ্ধদেব বসু সম্পর্কিত আলোচনার পাশে তাঁকে দেখি ‘আধুনিকের উপেক্ষা’ জর্জর মোহাম্মদ লুৎফর রহমানদের শিল্পসত্তা আবিষ্কার-তৎপর।আহমাদ মাযহার তাঁর শিল্পসাহস ও স্বাতন্ত্র্যে পূর্বসূরি-বিচারের প্রথাসিদ্ধ, ভক্তিবাদী দৃষ্টিকোণকে খারিজ করে সংশ্লেষণ-বিশ্লেষণের এক নতুন পথ নির্মাণ করেছেন। ব্যক্তিকে উন্মূল একক না ধরে তাকে সমাজ-সময় ও পরিপ্রেক্ষিতের পাটাতনসমেত দেখতে চেয়েছেন। ফলে অতিমূল্যায়ন বা অবিচার কোনোটারই আশঙ্কা থাকে না। পূর্বসূরিগণকে ভিত্তিভূমে রেখে লেখক সন্ধান করেছেন সমাজ-সাহিত্য-রাষ্ট্রের সম্মুখগামী অভিমুখ। প্রচল কিংবদন্তি বা লোকপ্রিয় বিশেষণের প্রতি বিন্দুবৎ মোহিত না হয়ে পূর্বসূরিগণকে উদ্ধার করেছেন গভীরতাগামী পাঠে, স্বচ্ছ যুক্তিবিচারে এবং তুলনামূলক আলোচনা-প্রত্যালোচনায়। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লেখকের উদার-অসাম্প্রদায়িক-ইহজাগতিক দৃষ্টিভঙ্গি আর ব্যক্তিত্বব্যঞ্জিত ভাষার লাবণ্য। স্মারক-আলোচনার পরিসর ছাপিয়ে অতঃপর এই বই হয়ে ওঠে আমাদের গদ্যসাহিত্যের এক বলবান-নিরুপম সংযোজন। পিয়াস মজিদ
Ahamad Mazher জন্ম : ২৭ মার্চ ১৯৬৩, ঢাকায়। শিক্ষা : ১৯৭৮ সালে ঢাকা খিলগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস। সি, শহীদ সোহরাওয়াদী কলেজ থেকে ১৯৮০ সালে এইচ এস সি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৮৩ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে স্নাতক এবং ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর। ছোটদের জন্য গল্প কবিতা ও প্ৰবন্ধ লিখে প্রথম দিকে পরিচিত হলেও সাম্প্রতিক কালে সমাজ-চিন্তা ও গবেষণামূলক প্রবন্ধ, সংস্কৃতি ও সমালোচনা লিখছেন। অনুবাদ-রূপান্তর ও পুনর্কথনমূলক রচনাও রয়েছে কিছু। রচিতঅনূদিত-সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা ষাটের অধিক। শিক্ষা ও সংস্কৃতিধর্ম প্রতিষ্ঠান বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের গঠন যুগে দীর্ঘ ১৭ বছর যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে চ্যানেল আই-এ কর্মরত। এছাড়াও বইয়ের জগৎ নামে একটি ত্রৈমাসিক লিটল ম্যাগাজিন সম্পাদনা করেছেন।