পরিচিত ড্রাইভার। ওর সিএনজি করেই আমি মীরপুর যাই। ড্রাইভার ছেলেটাও আমাদের গলিতেই থাকে বৌ-বাচ্চা নিয়ে। ও জানে প্রতি শুক্রবার সকালে আমি যাই আর শনিবার বিকেলে ফিরে আসি। ওই আমাকে দিয়ে আসে, আবার নিয়ে আসে। আজ যেটা দেখছি এরকম হবার কথা নয়। আজ শুক্রবার, নটায় বাড়ির গেট থেকে বেড়িয়ে সিএনজি রাখার জায়গায় দেখি ওর গাড়িই আছে তবে একজন ভদ্রমহিলা বসে আছেন গাড়িতে। আমার একটু বিরক্ত লাগলো। জানে ছেলেটা, আমি পার্টনার নিয়ে চলা পছন্দ করি না। এমনিতেই বয়স বেড়ে গেছে বলে একটুতেই রেগে যাই। এমন সময় ছেলেটা হাত নাড়তে এল। সেই খাকি প্যান্ট আর হলুদ শার্ট। বললো, "খালাম্মা বসেন। কুনু অসুবিধা নাই। আমার ছোট চাচী। মাথায় একটু সমস্যা। তবে এমনি ভাল। উনিও মীরপুরে যাবেন। আমার বড় চাচার বাড়ি।" আমি অন্য সিএনজি খুঁজব কিনা ভাবছি। কেন যেন ভালো লাগছে না। এর মধ্যেই ছেলেটা এসে আমার মালপত্র সব তুলতে লাগল। আমার সঙ্গে এই শুক্রবার সকালে মালপত্র একেবারে কম থাকে না। আমার মায়ের জন্য সারা সপ্তাহ ধরে অফিসের ফাঁকে ফাঁকে যেসব খাবার তৈরি করি, সে সব হটকেসে, বা আইসক্রীম কেসে করে নিয়ে যাই। বলতে গেলে একটা সিএনজি একারই দরকার। আমার মা বড় ভাইয়ের সঙ্গে থাকেন। ভাবীও চাকরী করেন। ওনার আবার ব্যাঙ্কের চাকরী, সময় পান না, যেজন্য মায়ের পছন্দের খাবারগুলো আমিই নিয়ে যাই। মা খুব বুড়ো মানুষ কিন্তু সবাই তো জানে, বুড়ো মানুষেরাই এটা ওটা খেতে বেশি পছন্দ করে।
তিনি তরুণ কবি হিসেবেই সমধিক পরিচিত। সমান দক্ষতা রয়েছে কথাসাহিত্য ও অনুবাদে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ সহাস্য বিষন্নতা প্রকাশিত হয় ২০০৭ সালে। প্রথম উপন্যাস আরমান শেখ ও তার শেকড় সংক্রান্ত জটিলতা (২০০৮)-এর জন্য পেয়েছেন খুলনা রাইটার্স্ পদক ২০০৯। তৃণমূল মানুষকে খুব কাছে থেকে দেখেছেন। প্রান্তিক সাংবাদিকতার সুবাদে পেয়েছেন প্রাকৃতজন পুরস্কার ২০০১। তাঁর উপন্যাসের প্রতি পরতে মানুষের জীবনবোধ, দ্বন্ধ, দর্শ্ন, জীবনকে নৈর্ব্যক্তিকভাবে দেখার প্রবণতা লক্ষনীয়। এই সঙ্গে প্রবল আবেগময় ভাষার সহজ সরল বুননে পাঠককে ধরে রাখেন উপন্যাস শেষ না হওয়া পর্য্ন্ত। একাধিক বই পুনঃমুদ্রিত হয়েছে। এ লেখকের প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ২৬টি।