প্রিয় গ্রাহক, রকমারি আপনার পছন্দের ক্যাটাগরির নতুন যে কোন পণ্য এবং এক্সক্লুসিভ সব অফার সম্পর্কে সবার আগে জানাতে চায়।
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন। মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
follower
কালিদাস রায়
১৮৮৯ সালের ২২ জুন পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার কড়ুই গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা যোগেন্দ্রনাথ রায় ছিলেন কাশিমবাজার রাজ এস্টেটের কর্মচারী। বৈষ্ণব কবি লোচনদাস ঠাকুর ছিলেন তাঁর পূর্বপুরুষ। কালিদাস কাশিমবাজার আশুতোষ চতুষ্পাঠীতে সংস্কৃত শেখেন এবং পরে কাশিমবাজারের খাগড়া লন্ডন মিশন স্কুলে অধ্যয়ন করেন। ১৯১০ সালে তিনি বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করে স্কটিশ চার্চ কলেজে দর্শনশাস্ত্রে এমএ শ্রেণিতে অধ্যয়ন করেন; কিন্তু চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আগেই পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। রংপুরের উলিপুর মহারানী স্বর্ণময়ী হাইস্কুলের সহশিক্ষক (১৯১৩) হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। পরে কিছুদিন (১৯২০-৩১) চবিবশ পরগনার বড়িশা হাইস্কুলে শিক্ষকতা করার পর রায়বাহাদুর দীনেশচন্দ্র সেনের সহায়তায় তিনি কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখায় প্রধান শিক্ষকরূপে যোগদান করেন এবং ১৯৫২ সালে অবসর গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। কালিদাস ‘রসচক্র’ নামে একটি সাহিত্য সংসদ প্রতিষ্ঠা করেন এবং রবীন্দ্র-ভাবধারায় উজ্জীবিত হয়ে তিনি কাব্যচর্চা শুরু করেন। রোমান্টিকতা, প্রেম, পল্লিজীবন, সমাজ, ঐতিহ্যপ্রীতি এবং বৈষ্ণবভাব তাঁর কবিতার প্রধান বিষয়। তাঁর মোট কাব্যগ্রন্থ ১৯টি; তন্মধ্যে কুন্দ (১৯০৭) তাঁর প্রথম প্রকাশিত কাব্য। এ ছাড়া পর্ণপুট (১৯১৪), ঋতুমঙ্গল (১৯১৬), রসকদম (১৯২৩), হৈমন্তী (১৯২৪), লাজাঞ্জলি, ব্রজবেণু (১৯৪৫), চিত্তচিতা, পূর্ণাহুতি (১৯৬৮) ইত্যাদি তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। তিনি কালিদাসের শকুন্তলা, কুমারসম্ভব এবং মেঘদূতের অনুবাদ করেন। প্রাচীন বঙ্গ সাহিত্য পরিচয়, প্রাচীন বঙ্গ সাহিত্য, পদাবলী সাহিত্য, শরৎ-সাহিত্য ও সাহিত্য প্রসঙ্গ তাঁর সমালোচনা গ্রন্থ। তাঁর রচিত শিশুতোষ গল্পকাহিনীও আছে। ‘বেতালভট্ট’ ছদ্মনামে রচিত তাঁর রম্যরচনাগুলি পাঠকসমাজে খুবই সমাদৃত হয়েছে। সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ কালিদাস বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। তিনি রংপুর সাহিত্য পরিষদের ‘কবিশেখর’ উপাধি (১৯২০), কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ (১৯৫৩) ও ‘সরোজিনী স্বর্ণপদক’, বিশ্বভারতীর ‘দেশিকোত্তম’ উপাধি, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ (১৯৬৩) এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডিলিট ডিগ্রি (১৯৭১) লাভ করেন। ১৯৭৫ সালের ২৫ অক্টোবর কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়। [শিপ্রা দস্তিদার]