প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
follower
মীর মােবাশ্বের আলী ১৯৪১ সালে জন্ম। ১৯৫৮ সালে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি। লেখাপড়ার সঙ্গে নানা কো-কারিকুলার কাজে উৎসাহী। প্রকৌশলীদের সাহিত্য ও সুকুমার শিল্পে বিকাশ এবং মানসিক মননে। উৎসাহী। ইউকসুর সভাপতি হন ১৯৬২ সালে। ১৯৬২-তে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী লাভ। বিভাগে শিক্ষক হিসাবে মনােনীত ও ডেপুটেশনে সদ্য শুরু হওয়া স্থাপত্য শিক্ষায় হাতেখড়ি। ১৯৬৩-তে ইউনিভার্সিটি অব ফ্লোরিডা, যুক্তরাষ্ট্রে ইউএস এইডের উদ্যোগে স্থাপত্য শিক্ষার জন্য গমন। ১৯৬৬-তে স্থপতি হিসাবে প্রত্যাবর্তন ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগে শিক্ষকতা শুরু। সেই থেকে শুরু। এরপর ৪০ বৎসরের বেশি সময় ধরে এ শিক্ষা অঙ্গনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। ১৯৬২ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত টানা প্রায় ৪৫ বৎসর । এত সময় ধরে কেউ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটানা শিক্ষকতা করেছেন বলে মনে হয় না। ১৯৭৪-৭৬ দুই বৎসর ইউনিভার্সিটি অব নিউক্যাসল আপঅন টাইন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থাপত্য (হাউজিং) বিষয়ে এম ফিল ডিগ্রী লাভ। ১৯৯৭-৯৮ যুক্তরাষ্ট্রে স্যাবাটিক্যাল ছুটি কাটান। তিনি বাংলাদেশে স্থাপত্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিভাগের অর্জন, সাফল্য, ব্যর্থতা ইত্যাদি সবকিছুই অনেকাংশে তার উপর বর্তায়। তিনি অনেকদিন বিভাগীয় প্রধান ও অনুষদেও ডীন-এর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৮৮-তে টিচার্স এসােসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তিনি সবসময় মনে করেন স্থাপত্য শিক্ষা তথা যেকোনাে সৃজনশীল বৃত্তি অনুশীলনের পরিবেশ, সাধারণ বা প্রকৌশল শিক্ষার পরিবেশের চাইতে একটু ভিন্ন। এই সত্য প্রতিষ্ঠিত করতে তাকে অনেক চড়াই উত্রাই পার হতে হয়েছে। অনেক শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা ও বিধি নিষেধ পেরিয়ে আজ স্থাপত্য বিভাগের যে অবস্থান, একজন প্রধান প্রতিষ্ঠাকারী হিসাবে তাতে তার অবদান অনেক। তথাপি স্থাপত্য ও পেশার চরম উৎকর্ষের জন্য এই অবস্থান পরিবর্তন ও পরিমার্জনের প্রয়ােজন আছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বােসার্ট স্কুলের অনুসারীদের মতাে ভালাে কম্পােজিশন, আধুনিকতা ও প্রযুক্তির প্রয়ােজনে বিশ্বাসী। পাশ্চাত্যের শিল্প আন্দোলন বা আর্ট মুভমেন্টের ধারা আমাদের দেশের সার্বিক পরিবেশ থেকে উদ্ভূত নয় ও আমাদের জন্য অনুকরণীয় নয় বলে তিনি মনে করেন। শিক্ষকতার মাঝে থেকেও স্থাপত্য পেশার সাথে তিনি সরাসরি জড়িত থেকেছেন। বিভিন্ন পর্যায়ে ডিজাইনের কাজ করেছেন। প্রথম পর্যায়ে টেলিফোন ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (TIC) টঙ্গি, ফৌজি জুট মিল, ঘােড়াশাল ফ্লাগ স্টেশন ও অফিস ভবন, চট্টগ্রামে পতেঙ্গায় বিসিআইসি হাউজিং, ঢাকা এয়ারপাের্টে সিভিল এভিয়েশন অফিস, ফ্রেট (Freight) টার্মিনাল ছাড়াও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের ডর্মিটরি ও অনেক প্রাইভেট বাড়ি ডিজাইন করেন। এর বাইরে তিনি অনেক সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। এমআইটি (যুক্তরাষ্ট্র), লুভেন (বেলজিয়াম), আলীকান্তে (স্পেন), বিআইটি (কলকাতা) ইত্যাদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি বক্তৃতা করেন। দেশে বিদেশে তার অনেক পাবলিকেশন আছে। তিনি বাংলাদেশে জাতীয় পর্যায়ে প্রায় সকল প্ল্যানিং ও ডিজাইন কর্মকাণ্ডে প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে জড়িত ছিলেন । তিনি ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের ফেলাে, ইন্সটিটিউট অব আর্কিটেক্টস। বাংলাদেশের সদস্য ও এককালীন সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের অনারারি সদস্য। সম্প্রতি ১৯৯৫ সালে জাপান থেকে প্রকাশিত ‘581 Architects in the world' শিরােনামের স্থাপত্য পুস্তিকায় বাংলাদেশ থেকে তার জীবনী এবং ডিজাইন অন্তর্ভুক্ত ও নির্বাচন করা হয়। ধর্ম ও দর্শন বিষয়ে পড়াশুনা তার প্রধান শখ । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ধর্মতত্ত্ব ডিপার্টমেন্টে বিজ্ঞান ও ধর্মত বিষয়ে বক্তৃতা দিয়ে থাকেন। দীর্ঘাঙ্গী, আকর্ষণীয় মুখায়বের অধিকারী অধ্যাপক মীর মােবাশ্বের আলী। এক বিরল ব্যক্তিত্বের মানুষ। তিনি সুবক্তা। তার প্রভা ও বিচক্ষণতার প্রকাশ বিভিন্ন সেমিনার সিম্পােজিয়াম ও বৈঠকে উপর্যপুরি প্রতিফলিত হয়েছে। তিনি মূলত প্রচারবিমুখ এবং সেই অর্থে আত্মকেন্দ্রিক। দীর্ঘ জীবনে তিনি যে ব্যক্তিগত ও পেশাগত অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন তা সামগ্রিকভাবে প্রকাশিত হলে নগর প্রশাসনের আনাচে কানাচে বিদ্যমান। বিভিন্ন অবিশ্বাস্য ঘটনার ইতিবৃত্ত জনসমক্ষে উদঘাটিত হােত। প্রবন্ধ আকারে দেশে বিদেশে নানা প্রকাশনার সাথে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন । তবে মাতৃভাষায় নিজ বাসভূমে এটাই তার পুস্তক আকারে প্রথম প্রকাশনা। সবকিছু ছাপিয়ে তার সবচেয়ে বড় অর্জন তার অগণিত গুণগ্রাহী ছাত্রছাত্রীদের উদ্ভাসিত ভালােবাসা। তিনি মনে করেন, এই ভালােবাসাই তার চলার পাথেয় হয়ে থাকবে।
(Showing 1 to 2 of 2 items)
demo content