প্রিয় গ্রাহক, রকমারি আপনার পছন্দের ক্যাটাগরির নতুন যে কোন পণ্য এবং এক্সক্লুসিভ সব অফার সম্পর্কে সবার আগে জানাতে চায়।
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন। মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
follower
কোয়েল তালুকদার
তাহার কথা কোয়েল তালুকদারের জন্ম সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর পাড়ে কুসুমপুর গ্রামে। ওখানেই তার বেড়ে ওঠা, ওখানেই সে বাল্য ও শৈশবকাল কাটিয়েছে। গ্রামে স্কুল জীবন শেষ করে সে ঢাকায় চলে আসে। সে এসেছিল (তার কথায়) ---' তখন মাঘের শীত। এক সন্ধ্যায় বয়রা ঘাট থেকে বড়ো স্টীমারে উঠিলাম। কুয়াশাচ্ছন্ন যমুনা নদী। নদীতে জল কম। তখন মধ্য রাত্রি। এম.ভি সোহরাওয়ার্দী বড়ো জাহাজখানি বিকট ঝাঁকুনি দিয়া চরে আটকিয়া গেল। সারারাত্রি একটি মার্কিন কাপড়ের গিলাফ গায়ে দিয়া ডেকের ভিতর ঘুমিয়া থাকিলাম। তারপর ভোর হইল। নদীতে জোয়ার আসিল। স্টিমার ছাড়িল।' তার কথায় বলি-- 'এক অর্বাচীন তরুণ ঢাকা শহর ঠিকমতো চেনে না। সে বিস্মিত হয়েছিল, এই শহরে কোথাও কোনো ধানক্ষেত নেই, বহতা নদী নেই, জারুল তমাল আর শিরীষের বন নেই। সে ডবলডেকার বাসে করে মিরপুর থেকে প্রতিদিন কলেজ করত। আর বিকাল বেলা মিরপুরের নির্জন বধ্য এলাকাগুলোতে একাকী ঘুরে বেড়াত।' এই তরুণই রাত জেগে কবিতা লিখত। গল্প লিখত। তার কুসুমপুরের কথা লিখত। সে কেবল লিখেই রাখত। ছাপাতো না কোথাও। আবার সেইসব সে হারিয়েও ফেলেছিল। সে ঢাকা সিটি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। এখান থেকেই সে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর তার কর্মজীবন। তার কথায় বলি---' কী কারণে জীবনের তেত্রিশ বছর লিখলাম না। তা আমি বলতে পারব না।' সে ছিল নাকি তার লেখালেখির গ্রহণকাল। ছাত্র অবস্থায় তিনি লেখালিখি করতেন এবং সুনামও কুড়িয়েছিলেন। হঠাৎ করে তাকে এ ভূবনে আর বিচরণ করতে দেখা যায় নাই। কেন যে নিজেকে এ ভূবন থেকে অন্য ভূবনে সরিয়ে নিয়েছিলেন তার উত্তর সময়ই হয়তো তার কাছে থেকে পাওয়া যাবে। সে একজন অস্থির চিত্তের মানুষ। কোনো কর্মেই তিনি স্থির নয়। যাযাবরীয় জীবন পছন্দ হলেও বেঁধেছিলেন তিনি মায়াবী সংসারের বেড়াজালে। তারপরেও সে ঘুরেছে বাংলাদেশের পথে পথে। কখনো চন্দ্রনাথের পাহাড়ে উঠে মন্দির দেখেছেন, কখনো দেখেছেন আদিনাথের পাহাড় থেকে সাগরের জলরাশি। সন্ধ্যা নদীতে সন্ধ্যাবেলায় নৌকা নিয়ে ঘুরেছেন। আবার খানজাহান আলী র মাঝারে বসে প্রার্থনায় রত হয়েছেন। জীবনকে দেখেছেন তিনি মানুষের কাছে যেয়ে। কখনো সে আরব ভূমির মরুবালুতে রেখেছে চোখ।আবার নেপালের ধূলিখেলের ধূলিও লাগিয়েছে চোখে। দার্জিলিংয়ের সাড়ে তিন হাজার ফুট উঁচু পাহাড় থেকে দেখেছে হিমালয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘা। আবার ব্যাংককের পাতাইয়া বালুকাবেলায় হেঁটেছে হিপ্পিদের মতো চোখ মেলে সাগর পানে। সে উড়ে চলে গিয়েছিল হলিউডেও। সেখানে বিখ্যাত সব স্টুডিও গুলোতেও সে ঘুরেছে। জীবনকে তিনি উপভোগ করেছেন নানা বৈচিত্র্যে। তাইতো তিনি নিজের জীবনকে হারিয়ে ফেলেননি। তার লেখাতেই সন্ধান পাওয়া যায় একজন মায়াবতীর কথা। ব্যাক্তি জীবনে তিনি একজনের স্বামী ও তিন সন্তানের পিতা। তার কথায়, তার সহপাঠী বন্ধু আফজালুল বাসারের প্রেরণা ও গ্রন্থ প্রকাশের ক্ষেত্রে সহযোগিতা পাওয়ার কারণে সে আবার লেখালেখি জগতে ফিরে এসেছে। তার চারটে গল্পের বই এখন প্রকাশিত-- 'পূর্ণিমানিশীথিনী-সম', 'মহুয়া বনে' 'দেবযানী ' ও রোল নং ১৭ দোলা মিত্র। তার প্রথম উপন্যাস 'অপ্রাপণীয়া'। যে উপন্যাস বিপুল পাঠক প্রিয়তা পেয়েছে।