প্রিয় গ্রাহক, রকমারি আপনার পছন্দের ক্যাটাগরির নতুন যে কোন পণ্য এবং এক্সক্লুসিভ সব অফার সম্পর্কে সবার আগে জানাতে চায়।
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন। মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
followers
ইমাম ইবনে হাযম আন্দালুসী রহিমাহুল্লাহ
ইমাম ইবনে হাজম রহ.-এর প্রকৃত নাম আলি। উপনাম আবু মুহাম্মদ। তবে তিনি ‘ইবনে হাজম’ নামে খ্যাতি লাভ করেন। তার পিতার নাম আহমদ। বনু উমাইয়ার কিছু লোক আন্দালুসিয়ায় আসার সময় ইবনে হাজম রহ.-এর পূর্বপূরুষগণও তাদের সঙ্গে ছিলেন। ইবনু হাজম আল-আন্দালুসি গ্রন্থে ড. আব্দুল হালিম উয়াইস লিখেছেন, ইবনে হাজমের বংশের মধ্য থেকে তার উর্ধ্বতন দাদা খালাফ ইবনে মাদান প্রথম আন্দালুসিয়ায় পা রাখেন। আন্দালুসিয়া বিজেতা মুসা ইবনে নুসাইরের বাহিনীর সঙ্গে তিনি ৯৩ হিজরিতে আন্দালুসিয়ায় আসেন। তিনি ৩৮৪ হিজরির রমজান মাসের শেষ দিন (মুতাবেক ৭ নভেম্বর ৯৯৪ ঈসায়ি) বুধবার ভোরে কুরতুবায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বংশ ছিল আন্দালুসিয়ার একটি অভিজাত বংশ। পিতা আন্দালুসিয়ায় উমাইয়া শাসকদের মন্ত্রী ছিলেন। বড় হয়ে তিনি নিজেও মন্ত্রী হয়েছিলেন। মর্মর ও মার্বেল পাথরের কারুকাজ, স্বচ্ছ পানির ফোয়ারা, উজ্জ্বল আলোর ব্যবস্থার আলিশান প্রাসাদ তিনি শৈশব যাপন করেন। উমাইয়া বংশের হাত থেকে ক্ষমতার বাগডোর বনু আমেরের হাতে চলে গেলে অন্যান্য আমির-উমারা ও উজিরদের মতো ইবনে হাজমের পিতাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হন। ঐশ্বর্য ও প্রাচুর্যময় পরিবারটি মুহূর্তে দরিদ্রতায় নিপতিত হয়। এর পরের দুঃসহ জীবন সম্পর্কে তিনি নিজেই বলে গেছেন অনেক কথা। জ্ঞান সাধনা শৈশবে কুরআনুল কারিম হিফজ করেন। এমনকি, কুরআনুল কারিমের অর্থও শেখেন। তৎকালীন সময়ে ভাষা সমৃদ্ধ করার অন্যতম একটি মাধ্যম ছিল কাব্য। বালক ইবনে হাজমও অনেক কবিতা মুখস্থ করে ফেলেন। লিখন পদ্ধতি শেখেন। কিশোর বয়সে তিনি সুফি প্রকৃতির বিদগ্ধ আলেম আল্লামা আবু আলি হুসাইন আল-ফাসি রহ.-এর কাছে দীনি শিক্ষার পাঠ নেন। ওই বয়সেই তিনি বিখ্যাত মুহাদ্দিস আহমদ ইবনে জাসুর রহ.-এর থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন। শুরুতে ফিকহে মালেকির জ্ঞান আহরণ প্রথমে তার অধ্যয়নের বিষয়বস্তু ছিল মালেকি ফিকহ। কেননা তখন আন্দালুসে মালেকি ফিকহের ব্যাপক চর্চা ছিল। তা ছাড়া এটি রাষ্ট্রীয় ফিকহ হিসেবেও স্বীকৃত ছিল। এরপর তিনি মালেকি মাজহাব ছেড়ে কেন শাফেয়ি মাজহাব গ্রহণ করেছিলেন তার সঠিক কারণ উৎঘাটন না করা গেলেও, এটুকু অন্তত বলা যায়, তিনি অন্যান্য ইমামদের তুলনায় ইমাম শাফেয়ি রহ.-এর রচনাবলি অধিক পড়েছেন এবং প্রভাবিত হয়েছেন। (এরপর হয়েতা মুগ্ধ হয়ে শাফেয়ি মাজহাব গ্রহণ করেন।) কারণ, ইবনে হাজম রহ.-এর ভেতর সমালোচনা, জারহ এবং স্বাধীন চিন্তার গুণটি খুব প্রকট ছিল। হতে পারে মাজহাব ত্যাগ করার এটিও একটি কারণ। ফিকহে শাফেয়ির জ্ঞান আহরণ এরপর তিনি ফিকহে শাফেয়ি অধ্যয়ন করেন। এ সময় তিনি ফিকহে হানাফিও অধ্যয়ন করেন; অপরাপর ফিকহের সঙ্গে পরিচিত হন। কিন্তু একটি সীমাবদ্ধ মাজহাবের গণ্ডিতে ‘বন্দিজীবন’ ইবনের হাজমের মতো মুজতাহিদ ইমামের জন্য অসহ্যকর ছিল বিধায় তিনি শাফেয়ি মাজহাবেও বেশি দিন স্থির থাকতে পারেননি। জাহেরি মাজহাবের দাঈর ভূমিকায় অতঃপর তিনি ইমাম শাফেয়ি রহ.-এর ছাত্র ইমাম দাউদ জাহেরি বাগদাদি আসবাহানি রহ.-এর চিন্তাধারায় আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। এরপর কুরআন ও হাদীসের জাহেরি বা বাহ্যিক দিকের অনুসরণের প্রতি লোকদের আহ্বান করতে থাকেন। এরপর তিনি এ মাজহাবকে খুব সমৃদ্ধ করে তোলেন।