”ইসলাম আতংক না আদর্শ” বই পরিচিতি: স্বামী লক্ষী শংকারাচার্য এই আধ্যাত্বিক সাধক ও চিন্তাবিদ স্বামীজী প্রথমে একটি ইসলাম বিরোধী পুস্তক রচনা করেন । পরবর্তীতে এই বিষয়ে আরো গবেষনা করতে গিয়ে তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি বড় ভুল করেছেন। ততদিনে বইটির ইংরেজী অনুবাদও বের হয়। এবং লাখ লাখ কপি মানুষের হাতে হাতে চলে যায়। কিন্তু নিজের ভুল চিন্তার জন্য জন্য অনুতপ্ত হন এবং এর প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য ভারতের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সে বইটির প্রচার প্রসার ঠেকানোর চেষ্টা করেন এবং সঠিক বক্তব্য প্রচার করতে থাকেন। পাশাপাশি মুসলিমদের সাথে দেখা করে নিজের ভুলের জন্য দু:খ প্রকাশ করেন। কিন্তু তার এই সম্প্রীতির বক্তব্য ততটা প্রকাশ পাচ্ছে না যতটা তার প্রথম বইটির পাচ্ছে। এক পর্যায়ে তিনি খুব হতাশ হয়ে পড়েন। পরে একদিন তিনি স্বপ্নে দেখেন যে, এক আলোকিত মানুষ তাকে নতুন করে এই বিষয়ে বই লেখার নির্দেশ দিচ্ছেন। কিন্তু বই লেখার জন্য প্রয়োজনীয় রেফারেন্স তার হাতে ছিলনা। পরের কাকতালীয় ভাবে তার নামে ডাকযোগে দুটো প্যাকেট আসে সেখান থেকে পেয়ে যান রেফারেন্স। তারপর তিনি এই বইটি লিখেন। এটি ভারতের বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। বাংলাদেশে বইটি নিবেদন করছে ছায়াবীথি। নাম ইসলাম: আতংক না আদর্শ। এই বইতে নিজের উপলব্দি থেকে তিনি একটি ফর্মূলা পেশ করেছেন। যে কিভাবে ইসলামকে জানলে বা অধ্যয়ন করলে মুসলিম বা অমুসলিমরা ইসলাম সম্পর্কে বিভ্রান্ত হবেন না। মুসলিম এবং অমুসলিম উভয়ের জন্য পাঠ্য এই বইটি একটি অসাধারণ ও ব্যতিক্রমী সংগ্রহ। একজন হিন্দু পন্ডিত কোরআন ও হাদীস ও অন্যান্য গ্রন্থ থেকে প্রায় ৩ শতাধিক রেফারেন্স ব্যবহার একটি বই লিখেছেন। এবং তাতে ইসলামের মহান আদর্শকে তুলে ধরেছেন। যারা আজ ইসলাম সম্পর্কে নিজেরা বিভ্রান্ত এবং অন্যদের বিভ্রান্ত করছে তাদের চোখ খুলে দেবে এই গ্রন্থ।
স্বামী লক্ষ্মী শংকরাচার্য ভারতের উত্তর প্রদেশের কানপুর জেলার এক ব্রাক্ষ্মন পরিবারে ১৯৫৩ সনে জন্ম নেন । তাঁর পিতা স্বামী সীতারাম ত্রিপাঠী এবং মাতা শ্রীমতি কৌশিল্যা দেবী দুজনই নামজাদা অধ্যাপক ছিলেন । প্রথম জীবনে তিনি একজন ঠিকাদার ছিলেন। পরে তিনি আধ্যাত্মিক গবেষণা ও ধর্মপ্রাণ জীবন বেছে নেন। এই শান্তিপ্রিয় মানুষটিকে কিছু হিন্দু পন্ডিত ইসলাম বিরোধীতার জন্য ব্যবহার করতে চেয়েছেন। তারা তাকে কোরআনের বিভিন্ন আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা করে ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচারণায় নামেন। তিনি প্রথমে তাদের দ্বারা প্রভাবিত হলেও পরে আরো ব্যাপক অনুসন্ধানে তিনি আসল সত্য উপলব্দি করতে পারেন। বর্তমানে তিনি ‘‘ইসলাম আতংক নয় আদর্শ’’ বইতে স্পষ্ট ভাষায় তথ্যপ্রমাণ হ উল্লেখ করেছেন পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তিময়, আদর্শপূর্ণ ও মানবিক ধর্ম হলো ইসলাম। তিনি ভারতের হিন্দুরা যেভাবে তাদের ধর্ম পালন করেন সেটারও বিরোধীতা করে আসছেন। তিনি নিজেকে প্রকৃত হিন্দু মনে করেন। এবং ভারতের বেশীরভাগ মানুষ তাদের মূল ধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে বলে মনে করেন। তিনি বলেন, ইসলামের সাথে সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। কিছু মানুষ কেবল ইসলামের বিরোধীতা করার জন্য এসব প্রচার করছে। তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতি সৃস্টির জন্য দুটো সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনের মাধ্যমে হিন্দু মুসলিমের ভাতৃত্ব ও ইসলামের কল্যাণমুথী আদর্শ মানুষের কাছে তুলে ধরেন। ইউটিউবে তার বক্তৃতার ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়।