মিশরীয় সভ্যতা বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতা। মিশরের নীল নদের অববাহিকায় এই সমৃদ্ধ সভ্যতার উন্মেষ ঘটে। মানব জাতির ক্রমবিবর্তন, উন্নতি ও উৎকর্ষতার এত বড়ো অবদান মিশরীয় সভ্যতার মতো আর কোনো সভ্যতায় দেখা যায়নি। বিশ্বের অন্যান্য সভ্যতার পথিকৃৎ হিসেবে মিশরীয় সভ্যতা এক অনন্য গুরুত্বের দাবিদার। খ্রিস্টপূর্ব ৩২০০ অব্দে আজ থেকে ৬ হাজার বছর পূর্বে মিশরীয় সভ্যতার সূচনা হয়। প্রাক-রাজবংশীয় যুগে মিশরে অনেকগুলো ক্ষুদ্র-ক্ষুদ স্বাধীন-নগর রাষ্ট্র ছিল। এগুলো সংঘবদ্ধ ছিল না। এ সময়ে মনেস নামের এক রাজা সমগ্র মিশরকে একত্রিত করে একটি জাতি ও রাষ্ট্র গঠন করেন। এভাবেই মিশরে রাজবংশের সূচনা হয়। নীল নদের তীরে গড়ে ওঠা এই সভ্যতার অর্থনীতি ছিল কৃষিভিত্তিক। মিশরীয়রা নীল নদে বাধ দিয়ে উন্নত কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল। অর্থাৎ কৃষিই ছিল প্রাচীন মিশরীয়দের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি। পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলের মানুষ যখন গুহায় বাস করত তখন মিশরে গড়ে ওঠা প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন মমি ও পিরামিড যে কোনো মানুষকে বিস্ময়ে অভিভূত করে। এগুলো ব্রিটিশ মিউজিয়াম, ফ্রান্স মিউজিয়ামসহ মিশরে সংরক্ষিত আছে। প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ প্রাচীন মিশরের এই বিস্ময়কর সভ্যতার দেখার জন্য ভিড় জমায়। মিশরের শাসক, পিরামিড, মমি এবং তখনকার মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক বইটিতে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। বইটিতে প্রকাশিত প্রতিটি অনুচ্ছেদ সোনেলা বøগে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হলে পাঠকের ব্যাপক সাড়া আমাকে এই বইটি প্রকাশে উদ্বুদ্ধ করেছে। যারা ইতিহাস জানতে আগ্রহী বিশেষ করে যারা সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র তাদের জন্য বইটি অত্যন্ত সহায়ক হবে বলে মনে করি। বইটিতে অনিচ্ছাকৃত কিছু ত্রæটি থাকলে পাঠকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।