"মনের মুকুরে কার ছায়া" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: প্রশস্ত হাইওয়ে চলে গেছে উত্তরে। মেজভাইয়ের মতাে রাজসিংহের কোনাে কুপ্রবৃত্তি ছিল না। সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়ে তিনি তৈরি করলেন প্রায় একশ বিঘে জমির ওপর তার ফার্মহাউস। নাম মনের মুকুর। শুধু মাঝখানে বিঘে পাঁচ-ছয় জায়গা শাল, কেঁদ । প্রভৃতি বনজঙ্গলে ভরা। তার বড় ছেলে শেখর সিংহ একটা লােককে রেখে গিয়েছিল বাপের কাছে। অন্ধকারে বেড়াতে বেরিয়ে সে গিয়ে পড়ল ওই বনজঙ্গলটার সামনে। আর তখনই দেখল সর্বাঙ্গে ঘন কালাে লােমে ঢাকা এক পিশাচমূর্তি। তার মুখের দুপাশে দুটো রক্তমাখা দাঁত। কোনােমতে পালিয়ে প্রাণ বাঁচাল সে। এরপর একদিন শীতের সকালে ছেলে আর পুত্রবধূদের নিয়ে ফার্মহাউসটা ঘুরে দেখতে গিয়ে বনজঙ্গলের ভিতরে একটা বহু পুরনাে তুলােট কাগজ এসে পড়ল সামনে। তাতে লেখা সে সুবেদার কর্ণবীর সিং। বহু বছর আগে ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধে তার মউত্ হয়েছে। এখন সে বনজঙ্গলেই ডেরা বেঁধে আছে। | রাজসিংহের ছেলেরা বাপের আশীতম জন্মদিন পালন করল। উদ্দেশ্য পূর্বসূরীদের সঞ্চিত হিরে-জহরত, মণিমুক্তো, সােনাদানা এসব তার বাবা কোথায় রেখেছেন তার সন্ধান পাওয়া। উৎসবে এলাে বম্বের নামী পপ, সিঙ্গার ঋত্বিকা পাণ্ডে। গান-বাজনা, খানা-পিনা, বিলিতি সুরা উপকরণের অভাব ছিল না। কিন্তু ভােরে আনন্দঘন পরিবেশের আমেজ ফুরােকার আগেই কে যেন চিৎকার করে ডাকল,-সর্বনাশ হয়েছে বাবু। নিচে নেমে আসুন, আমাদের বনজঙ্গলের ভিতর একটা কেঁদ গাছের শক্ত ডালে কে একটা অচেনা লােক গলায় দড়ি নিয়েছে। কিন্তু কি এই রহস্য? তার শেকড় যে অনেক গভীরে।
"মনের মুকুরে কার ছায়া" বইয়ের পিছনের কথা: পৌষের শীতে সর্বাঙ্গ কালো চাদরে ঢেকে একটা ছায়ামূর্তি চলছে বনজঙ্গলের দিকে। তাঁকে অনুসরণ করছে আর একজন, তাঁর হাতে টর্চ। আলো জ্বালতেই বনজঙ্গলের ভেতর থেকে আর একটি আলোর সংকেত দেখা দিল। কিছুক্ষণ পরেই ৯ এম এম এর পিস্তলের পরপর দুটো গুলি, যা রাত্রির শীতলতাকে খান খান করে ছড়িয়ে দিল। কিন্তু কার এই গুলি? আর তখনি বেজে উঠল হুইসেল।
Debol Debborma ভন্ম ওড়িশার ঝাড়সুগদায় মাতামহের বাসস্থলে। পিতা চণ্ডীচরণ চট্টোপাধ্যায়ের ছিল বদলির চাকরি। সেই সুবাদে শৈশব-কৈশাের কেটেছে দূর মফঃস্বলের স্থান থেকে স্থানান্তরে। মেদিনীপুরের পাঁচটি স্কুলে ক্লাস নাইন পর্যন্ত পড়া। সালকিয়া অ্যাংলাে-সংস্কৃতি স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন। বেলুড় ও বাঁকুড়ায় আই. এস-সি.। বাঁকুড়া ক্রিশ্চান কলেজ থেকে স্নাতক। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। কর্মজীবনের সূচনায় স্কুল-মাস্টারি। মফঃস্বল এবং কলকাতার স্কুলে। মাস কয়েক এ. জি. বেঙ্গলের চাকরি। তারপর ড. বি. সি. এস. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাণিজ্যকর আধিকারিক সহকারী কমিশনার হওয়ার পর অবসর। বর্তমান নিবাস সল্ট লেকে। কলেজ জীবন থেকেই সাহিত্যরচনায় ঝোক। প্রবাসী আয়ােজিত এক গল্প। প্রতিযােগিতায় জীবনের প্রথম বড়দের গল্প। সেই গল্পে বিশেষ পুরস্কারের সম্মান। এরপর থেকে নিয়মিত লেখালেখি। প্রথম অজিত চট্টোপাধ্যায় এই স্বনামে, পরে দেবল দেববর্মা ছদ্মনামে। প্রকাশিত গ্রন্থ প্রায় ৬০ এর অধিক। বেতারে-দূরদর্শনে একাধিক কাহিনির সম্প্রচার, নাটক সিরিয়াল রূপে। পছন্দ দূরভ্রমণ, সবুজ রঙ।