< b>"বেহাত বিপ্লব ১৯৭১” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: ১৯৭১ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অপর নাম । আহমদ ছফা বলিয়াছেন এ যুদ্ধের নায়ক অন্য কেহ নহেন—খােদ এদেশের জনগণ বা পামর জাতি। (নহিলে ‘আপামর জনগণ' কথাটার কোন অর্থই হয় না।) এই প্রস্তাবকেই ‘আহমদ ছফার প্রথম উপপাদ্য’ নাম দিয়াছেন সলিমুল্লাহ খান। রুশ বিপ্লবের লেনিন, চিনের মাও জেদং, কুবার চে গেভারা কিংবা আলজিরিয়ার ফ্রানৎস ফানোর মতন বড় কোন তত্ত্ববিদ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ফলে নাই। ফলনের মধ্যে সবেধন। সবুজমনি আহমদ ছফা। এই পামর জাতির মন তিনি যতখানি ধরিতে পারিয়াছিলেন আর কেহ ততখানি পারিবেন কিনা সংশয় আছে। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর বিচার করিয়া যে প্রস্তাব আহমদ ছফা ১৯৭৭ সনে প্রচার করিয়াছিলেন। তাহাই বেহাত বিপ্লব ১৯৭১ গ্রন্থের প্রধান সম্পদ। তদীয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক জটিলতা বইটি হারাইয়া যাইতে বসিয়াছিল। আহমদ ছফা মহাফেজখানা প্রথম কাণ্ডে সেই প্রায়লুপ্ত সম্পদই পুনরুদ্ধার করা হইল। আহমদ ছফার উপপাদ্য যদি সত্য হয় তবে মানিতে হইবে ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাহে নাই। ভয় ছিল এদেশের স্বাধীনতা সেদেশের সংখ্যাগুরু নিপীড়িত জাতি-বিজাতির স্বাধীনতা আন্দোলনের সম্মুখে উদাহরণ হইয়া দাঁড়াইতে পারে। স্বাধীন হইবার তিন যুগ পরও এদেশ আপনকার পাদুকা পরিয়া দাঁড়াইবার পারিল না। কারণ এদেশের মুক্তিযুদ্ধের ফল অপরে আত্মসাৎ করিয়াছে। বিপ্লব বেহাত হইয়াছে। ১৯৭১ সনের অপর নাম তাই ‘বেহাত বিপ্লব। ইতালির মহাত্মা আন্তনিয়াে গ্রামসির বেহাত বিপ্লব প্রস্তাবের ভিত্তিতে ১৯৭১ সনের বিচার সম্ভবত এই প্রথম।
সলিমুল্লাহ খান ‘ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ’ নামক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। তাঁহার কীর্তির মধ্যে গণ্য: আমি তুমি সে, আহমদ ছফা সঞ্জীবনী, সত্য সাদ্দাম হোসেন ও ‘স্রাজেরদৌলা’, আদমবোমা, স্বাধীনতা ব্যবসায় এবং Silence: On crimes of power। সম্পাদিত গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকার মধ্যে: ফ্রয়েড পড়ার ভূমিকা, বেহাত বিপ্লব ১৯৭১, আহমদ ছফার স্বদেশ, গরিবের রবীন্দ্রনাথ, প্রাক্সিস জর্নাল, রাষ্ট্রসভা পত্রমালা, অর্থ: আহমদ ছফা রাষ্ট্রসভা পত্রমালা, আহমদ ছফা বিদ্যালয়, Apostrophe: Working Papers of the Center for Advanced Theory এবং Occasional Papers in Theory। অনূদিত গ্রন্থের মধ্যে: সক্রাতেসের তিন বাগড়া এবং আল্লাহর বাদশাহি: ডরোথি জুল্লের নির্বাচিত কবিতা।