‘আজ কি চাঁদনী পশর রাইত? এমন রাতে অহনার হাত ধরে কিছুক্ষণ হাঁটতে পারলে ভালো হতো। সুহৃদ দেখল অহনার চোখ জলে টলমল করছে। এ কি শুধুই মায়া! নাকি অন্য কিছু, জানে না সুহৃদ! তবে সীমার মধ্যে অসীম সে সম্পর্কে বন্ধন। জগৎ কয়দিনের? সম্পর্ক বেঁচে থাকুক মায়ার বন্ধনে অনন্তকাল।’ সুহৃদ। মানুষ হিসেবে বোকা, সহজ সরল, আলাভোলা একজন...। তবে মানুষকে আকৃষ্ট করার এক অলৌকিক ক্ষমতা তার হাসিমাখা চেহারায়। সরল চাহনি, ন¤্র ব্যবহার আর সাজিয়ে কোনো কথাকে সে উপস্থাপন করতে পারে সহজেই। তাছাড়া, মানুষকে হাসানো ও মন ভালো করার অপূর্ব কৌশল জানে বলেই অল্পদিনে বন্ধু মহলে বেশ জনপ্রিয় হয় সে... সুহৃদের বন্ধু অহনা। এক সাথে ক্লাস, এক সাথে চলা-বলা আর খুনসুটির মধ্য দিয়ে হয় সম্পর্কের বন্ধন। সুহৃদ এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। তার জীবনের রেখাচিত্র অঙ্কিত হয়েছে এ বইটির পতায় পাতায়। কখনো স্বপ্নকথায় , কখনো স্বপ্ন ভঙ্গের যন্ত্রণা আর কল্পনার ঝর্ণাধারায় ভেসে বেড়ায় সুহৃদ। তাকে ঘিরে নানা চরিত্রের গমনাগমন। কেউ মুগ্ধতা ছড়ায়, কেউ এনে দেয় বিস্বাদের প্রতিবিম্ব। অহনা আর সুহৃদের এক নাটকীয় দৃশ্যের মধ্য দিয়ে এ উপন্যাসের ইতি টানেন ওয়ালিউল ইসলাম। তার প্রথম উপন্যাসের যে উত্তেজনা আর দীর্ঘ অপেক্ষার ক্লান্তি তা প্রতিয়মান হয় প্রচ্ছন্নভাবে।
ওয়ালিউল ইসলাম, এম এস, ক্রপবোটানি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ। জন্ম ফেব্রুয়ারী ৫, ১৯৮২ খ্রি. সালে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামে। বাবা মো. মোবারক হোসেন এবং মা মোছা. জোবেদা খাতুন। বাবা ছিলেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মা গৃহিনী। কর্মজীবন শুরু উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি দিয়ে। এরপর চলে আসেন প্রাইভেট সেক্টরে ঢাকাতে। ছোটবেলা কাটিয়েছেন বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা কেন্দ্রের কোলোনীতে। ঘুরেছেন দেশের ছাপ্পান্নটি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মিশেছেন মানুষের সাথে, শুনেছেন তাদের জীবনের কথা। তার মতে, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই এক একটা জীবন্ত উপন্যাস-সেগুলোকে মরফোলজিক্যালি বা এ্যানাটমিক্যালি কেঁটে ছিঁড়ে বানানো হয় কবিতা, গল্প বা উপন্যাস। ছোটবেলায় আজকের কাগজের পাঠকবন্ধুতে লেখালেখি করতেন। চাকরি জীবনে সুদীর্ঘকাল ছিলেন লাল তীর বার্তার সম্পাদক ও লেখক। লিখেছেন দশটিরও বেশী টেকনিক্যাল ডকুমেন্টারী স্ক্রিপ্ট, সেগুলো দিয়ে তৈরিও করেছেন ভিডিও ডকুমেন্টারি, রয়েছে নিজের লেখা পাঁচটি টেকনিক্যাল ট্রেনিং মডিউল। বর্তমানে আর্ন্তজাতিক জার্নালে তার তিনটি প্রকাশনা রয়েছে। ‘অসীম সম্পর্কের বন্ধন’ লেখকের মৌলিক রচনা- যা সমসাময়িক সমাজের প্রতিচ্ছবি ও সাধারণ মানুষের মুখের কথারই প্রতিধ্বনি মাত্র। তার প্রকাশিত কবিতার বই ‘ঘুণে ধরা শহরে’।