মাদক উৎপাদনকারী দেশ না হয়েও শুধু ভৌগোলিক কারণেই মাদকের বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি আমরা, বাংলাদেশিরা। এশিয়া মহাদেশের মাদক চোরাচালানের তিনটি প্রধান রুট- গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল, গোল্ডেন ক্রিসেন্ট ও গোল্ডেন ওয়েজের কেন্দ্রে আমাদের দেশটির অবস্থান। তাই আন্তর্জাতিক মাদক কারবারিরাও বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করার পায়তার চালায়। সে জন্য অভিনব, অদ্ভুত সব উপায় বেছে নিচ্ছে তারা। মাদকের বাহক হিসেবে ব্যবহার করছে দরিদ্র নারী, শিশুদেরকে। কখনো কখনো বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের। মাদকাসক্তদের ৪ ভাগের মধ্যে ১ ভাগই তরুণ। অথচ এই তরুণদের ওপর নির্ভর করে পরিবার, দেশ ও দেশের মানুষ এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে! মাদকের থাবায় তবে কি ধ্বংস হয়ে যাবে একটি প্রজন্ম? শহর থেকে গ্রাম, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়- সর্বত্রই মাদক ও মাদক ব্যবসায়ীদের করাল থাবা রুখতে কাজ করেছেন লেখক, সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে। পেশাগত জীবনে চৌকস এ কর্মকর্তা লড়ছেন সমাজের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনের কঠিন লড়াইয়ে। এলিট ফোর্সের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন (সি), বিপিএম (বার), পিএসসি, বিএন আগ্রহী পাঠকের জন্য হাতে তুলে নিয়েছেন কলম। বিভিন্ন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনকালে এবং র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক হিসেবে মাদক সেবনকারী ও মাদক কারবারিদের সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাচাই ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে তার যে অভিজ্ঞতার সঞ্চার হয়েছে তারই প্রতিফলন ঘটিয়েছেন তার লেখায়। গ্রন্থটিতে তিনি মাদক সেবনের ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব এবং মাদক কারবারিদের ভয়ানক ও অন্ধকার রূপের কথা তুলে ধরেছেন। দিয়েছেন সমাজ থেকে মাদককে সমূলে উৎপাটিত করবার রূপরেখা।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন, (সি), বিপিএম (বার), পিএসসি, বিএন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এক্সিকিউটিভ শাখায় কমিশন লাভ করেন ২০০১ সালে। ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের স্নাতক, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস’র এমএসসি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়’র এমবিএ। ব্যক্তিগত জীবনে কমান্ডার মঈন, স্ত্রী তাসমিয়া তিথী, পুত্র খন্দকার ওমর আল আনাস এবং কন্যা মারইয়াম বিনতে মঈনকে নিয়ে আশীর্বাদ প্রাপ্ত। দীর্ঘ এবং বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ছোট ও মাঝারি জাহাজের অধিনায়কত্ব, নৌ গোয়েন্দা পরিদপ্তরের স্টাফ অফিসারের দায়িত্ব সুনামের সঙ্গে পালন করেছেন। সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন দারফুর, সুদানে জাতিসংঘ মিশন। ২০০৪ সালের একুশে আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা মামলার আসামিদের গ্রেনেডসহ গ্রেফতার করে ২০০৯ সালে এবং র্যাবে অগ্রণী ভূমিকা পালনের জন্য ২০২১ সালে বাংলাদেশ পুলিশের সর্বোচ্চ পদক ‘বিপিএম’-এ ভূষিত হন। ২০০৭ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত কমান্ডার মঈন র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার উপ-পরিচালক হিসেবে বিপুল সংখ্যক জঙ্গি, চরমপন্থি, মাদক ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারিসহ বিভিন্ন কুখ্যাত অপরাধীকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় প্রশংসনীয় অবদান রেখেছেন। সম্প্রতি র্যাব ফোর্সেস এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে নির্মিত দস্যুমুক্ত সুন্দরবন বাস্তবায়নে ব্যতিক্রমধর্মী চলচ্চিত্র “অপারেশন সুন্দরবন” সিনেমাটির প্রযোজকের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশব্যাপী ব্যাপক সাড়া ফেলেন। ২০২১ সালের ২৫শে মার্চ থেকে তিনি র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক হিসেবে কর্মরত।