একশো বছর আগে—১৮৯৫-এর ২৮ [ডিসেম্বর—ফ্রান্সের পারি শহরে লুই ও অগুস্ত লুমিয়ের-এর সিনেমাতোগ্রাফ প্রদর্শনীর সূত্রে যেদিন চলচ্চিত্রের জন্ম হয়, সেদিন কেউই ভাবতে পারেননি যে ওই সামান্য সূচনাই ক্রমশ ব্যাপ্ত হবে অপরিমেয় বিশালতায়—একদিকে এনে দেবে বিরাট প্রমোদ বাণিজ্যের সুযোগ, অন্যদিকে পরিণত হবে উচ্চমানের শিল্পে । এবং এর ব্যাপক অভিঘাত ও প্রভাব ক্রমশ কিন্তু দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বের প্রায় সর্বত্র ; নতুনতর উদ্ভাবন ও কারিগরি মানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে সৃজনশীল চলচ্চিত্রকারদের বিভিন্ন ছবি সৃষ্টি করবে এক নতুন ও অভিনব 'সাংস্কৃতিক ইতিহাস । মর্যাদাময় সেই ইতিহাসে বাঙালি চলচ্চিত্রকারদের অবদান দীর্ঘকাল ধরে স্বীকৃত হলেও, বাংলা ভাষায় চলচ্চিত্রবিষয়ক নির্ভরযোগ্য গ্রন্থের সংখ্যা এখনও আশ্চর্যজনকভাবে কম । চলচ্চিত্রচর্চায় উৎসাহী পাঠকের স্বার্থে সেই অভাব পূরণ করতেই বিশ্ব চলচ্চিত্রের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে নির্মাল্য আচার্য ও দিব্যেন্দু পালিতের সম্পাদনায় পরিকল্পিত হয়েছে এই ভিন্ন ধরনের, চিন্তাস্পর্শী সংকলন : ‘শতবর্ষে চলচ্চিত্র’ । ‘অনুভব ও অভিজ্ঞতা’ এবং ‘ইতিহাস ও 'বিবর্তন' নামে দুই স্বয়ংসম্পূর্ণ খণ্ডে বিন্যস্ত এই বৃহদায়তন গ্রন্থে চলচ্চিত্রের জন্মলগ্ন থেকে পরবর্তী একশো বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণের ইতিহাস-সহ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে খ্যাত চলচ্চিত্রনির্মাতাদের সৃষ্টির মূল্যায়ন, চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত বিখ্যাতদের অভিজ্ঞতার বৃত্তান্ত, বিভিন্ন ধারা, প্রধান-প্রধান আন্দোলন, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অন্যান্য অভিঘাত বিষয়ক চিন্তা, বিভিন্ন শিল্প-মাধ্যমের সঙ্গে চলচ্চিত্রের সম্পর্ক এবং আরও নানা বিষয়ে রচনা ও জরুরি তথ্যপঞ্জি । বাংলা ভাষায় শুধুই চলচ্চিত্র নিয়ে এইরকম একটি সংকলন প্রকাশের পরিকল্পনা এর আগে হয়নি ।