একালের স্মরণীয় সাহিত্যসৃষ্টি চরণ ছুঁয়ে যাই-এর তিনটি পর্ব শেষ করতে দীর্ঘ তেরো বছর সময় নিয়েছেন লেখক শংকর। স্মৃতি ও ইতিহাসের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা বারশ পাতার এই পূর্ণকুম্ভে যেসব তির্থযাত্রী উপস্থিত হয়েছেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে তাঁরা তুলনাহীন। শংকর-এর নিজের কথায় : “সমাজের সর্বস্তরে চরণ ছুঁয়ে যাই যে এমন বিপুল পাঠকসমর্থন পাবে তা কল্পনার মধ্যে ছিল না। একটা জিনিস স্পষ্ট হল, পৃথিবীর সমস্ত ভক্তি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস এখনও উন্নাসিকদের ওয়েস্ট পেপার-বাস্কেটে বিসর্জন দেওয়া হয়নি। এই বইতে আমার নিতান্ত আপনজনেরা, বিশেষকরে মা, হেডমাষ্টারমশাই ও বারওয়েল সাহেব বার বার এসে গিয়েছেন, আরও উপস্থিত হয়েছেন যেতে-যেতে-দেখা অথবা আচমকা-খুঁজেপাওয়া বন্ধুদের বিচিত্র চরিত্র। ... আমার প্রিয় এই কাজটা পাঠক-পাঠিকারা অগ্রাহ্য করলে খুব কষ্ট পেতাম। ... স্বামী বিবেকানন্দ আমাকে যে যপমন্ত্রটি দিয়েছেন তা হলো—ইতিবাচক হও, সারাক্ষণ নেতি নেতি করে নিজেকে অজথা নিম্নগামী করো না। সেইসঙ্গে আরও যে—বাণীটি তাঁর জীবন ও সাধনা থেকে সংগ্রহ করেছি তা হলো, অনুগত হলেও সবসময় অনুসরণ করার প্রয়োজন নেই ।” প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের চরণ ছুঁয়ে যাই-তে সংখ্যাহীন পুরুষ ও রমণীর বিচিত্র আনাগোনা আর একবার প্রমাণ করলো শংকর কেন তুলনাহীন। কেন তিনি একালের বাঙালির সবচেয়ে প্রিয় কথাসাহিত্যিক ?
শংকর একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। তাঁর আসল নাম মণিশংকর মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল চৌরঙ্গী, সীমাবদ্ধ এবং জন অরণ্য। এই তিনটি বই নিয়ে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে। ২০১৬ সালে তিনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট সম্মানে ভূষিত হন।