"ছবির দেশে কবিতার দেশে" বইটির মূল সামারীঃ লেখক যখন নবীণ কবি ছিলেন, কলকাতা থেকে তিনিই ডাক পান পল এঙ্গেলের আমন্ত্রণে ক্রিয়েটিভ রাইটিং প্রোগ্রামে যান যোগদান করার জন্য। পল এঙ্গেল ছিলেন আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক। যদিও তিনি বাংলা কবিতার প্রতি বিশেষ ঝোঁক ছিলেন। ছবির দেশ কবিতার দেশ বলতে ফরাসী দেশকেই বুঝানো হয়েছে। কে যেনো বলেছিলেন, প্রত্যেক শিল্পীরই দুটি দেশ থাকে একটি হলো তার মাতৃভূমি আরেকটি হলো ফ্রান্স। সেখানে পৃথিবীর সব বিখ্যাত শিল্পী ও কবিরা জন্মগ্রহন করেছেন। লেখক সেই দেশকে ছবির সাথে তুলনা করেছেন। বইটির বেশীরভাগ জুরেই যার কথা আলোচিত হয়েছে তার নাম মার্গারিট ম্যাতিউ। যার সুবাদে তিনি ফ্রান্সকে আরো সুন্দর ভাবে চিনতে পেরেছেন। তার সাথে পরিচয় হয়েছে আমেরিকায় মার্গারিট সেখানে ডক্টরেট ডিগ্রি করার জন্য যান সেকানেই তার পরিচয়। মার্গারিট ম্যাথিউ এর সাথে তার সুম্পর্ক হওয়ার পরে লেখকে ফ্রান্সে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। লেখক যান, ম্যাথিউ ফ্রান্স সম্পর্কে নানা-অজানা কাহিনি,কালচার সংস্কৃতি, আচার আচরণ, বৈশিষ্ট, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, লেখক স্ব চোখে দেখতে পান এবং বিভিন্ন শহর ঘুরে বেড়ান দুজনে।
বিশ শতকের শেষাংশে জন্ম নেওয়া সব্যসাচী একজন বাঙ্গালি সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়। একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, সম্পাদক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট- এমন বহু পরিচয়ে সাহিত্যের অগণিত ক্ষেত্রে তিনি রেখেছেন তাঁর সুকুমার ছাপ। নীললোহিত, সনাতন পাঠক কিংবা কখনো নীল উপাধ্যায় ছদ্মনামে প্রকাশিত হয়েছে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর বই সমূহ। অধুনা বাংলাদেশের মাদারীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৭ সেপ্টেম্বর ১৯৩৪। কিন্তু মাত্র চার বছর বয়সেই স্কুল শিক্ষক বাবার হাত ধরে সপরিবারে পাড়ি দিয়েছিলেন কলকাতায়। ১৯৫৩ সালে সাহিত্যে বিচরণ শুরু হয় কৃত্তিবাস নামের কাব্যপত্রিকার সম্পাদনার মধ্য দিয়ে। ১৯৫৮ সালে প্রকাশ পায় প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একা এবং কয়েকজন’। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় এর বই মানেই পাঠকের কাছে আধুনিকতা আর রোমান্টিকতার মেলবন্ধন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কবিতার বই হলো ‘আমি কী রকম ভাবে বেঁচে আছি’, ‘যুগলবন্দী’ (শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে), ‘হঠাৎ নীরার জন্য’, ‘রাত্রির রঁদেভূ’ ইত্যাদি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বই সমগ্র ‘পূর্ব-পশ্চিম’, ‘সেইসময়’ এবং ‘প্রথম আলো’ তাঁকে এপার, ওপার আর সারাবিশ্বের বাঙালির কাছে করেছে স্মরণীয়। ‘কাকাবাবু-সন্তু’ জুটির গোয়েন্দা সিরিজ শিশুসাহিত্যে তাকে এনে দিয়েছিলো অনন্য পাঠকপ্রিয়তা। তাঁরই উপন্যাস অবলম্বনে কিংবদন্তী পরিচালক সত্যজিৎ রায় পরিচালনা করেছিলেন ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ এবং ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’র মতো চলচ্চিত্র। পাঠক সমাদৃত ভ্রমণকাহিনী ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ কিংবা আত্মজীবনীমূলক ‘অর্ধেক জীবন বই’তে সাহিত্যগুণে তুলে ধরেছিলেন নিজেরই জীবনের গল্প। ২০১২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চার দশকে তিনি পরিচিত ছিলেন জীবনানন্দ পরবর্তী পর্যায়ের অন্যতম প্রধান কবি এবং বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসেবে।