লালনযাত্রীর পশরা কি আর হতে পারে গান ছাড়া। শতাব্দী লালিত লােকসংগীতের আসরে তার গান এখন জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। আসরে আসরে লালনকে নিয়ে মিডিয়ার সামনে আবির্ভূত বাউল ও অন্য শিল্পী, সংকলক, পুস্তকপ্রণেতা, ঔপন্যাসিক মুভি। শ্ৰোতাসকল গানের নেশায় বিমুগ্ধ হলেও ঔৎসুক্য বাণীর আড়ালে রহস্যের প্রতি। সেই কাহিনী বলতেই গল্পের অবতারনা। লেখকের যাত্রা মওলানা জালালউদ্দিন রুমিকে নিয়ে সুদূর কোনিয়ায়, যেখানে ফেঁটে রুমির নিজ হাতে তৈরি বাগানে অজস্র গােলাপ, আধ্যাত্মিক জগতের যা সৃষ্টি করে ভালােবাসার বাগান, ছােট্ট পৃথিবীর আনাচে কানাচে যার কথা আজ ছড়িয়ে পড়েছে। রুমির অলৌকিক বাগান নতুন জেনারেশনের ক্ষুধা খানিকটা হলেও মিটিয়েছে। লালন আর। রুমি একই সূত্রে, কে জানত। লালনের অনেক গানে উপস্থিত মসনবী এবং তার আড়ালে তার প্রিয় মানুষ। প্রিয় রসুল। মস্নবী জুড়ে শুধু নবীর কথা, যদি এতে পেয়ে যাও অন্যজনের কথা সেই মসনবী ফেলে দিও, সেটি আমার লেখা নয়। লালন সেদিক থেকে অনেক নতুন, তার অনেক গান সংগ্রহ হয়নি, বিশেষ করে যেগুলাে রসুল সংক্রান্ত। শিষ্যরা যেদিকে গিয়েছে সেদিকেই ছিল সংগ্রহের ঝোঁক। ফিরে আসি নিজ নদীতীর, কালিগঙ্গার তীরে, যেখানে বসেছে। লালনের মেলা। আমিও উপস্থিত শাইজি যাত্রার সামান্য পশরা নিয়ে আমার ঝুলিতে। লালনের অন্তর্দৃষ্টি কাকে খুঁজে ফেরে, তার সন্ধান এবার আমার চোখে। অল্পতেই পেয়ে যাবেন তার ঠিকানা।
মুস্তাফা জামান আব্বাসী (জন্ম: ৮ ডিসেম্বর, ১৯৩৬) একজন বাংলাদেশি সঙ্গীতজ্ঞ এবং সঙ্গীত বিষয়ক অধ্যাপক ও গবেষক। তিনি লোক সঙ্গীতশিল্পী ও সুরকার আব্বাসউদ্দীন আহমদের কনিষ্ঠপুত্র। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদকে ভূষিত হন এবং লেখালেখির স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ। তিনি ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির "কাজী নজরুল ইসলাম এবং আব্বাসউদ্দীন আহমদ গবেষণা ও শিক্ষা কেন্দ্র" এর গবেষক। নজরুল ইসলামকে নিয়ে তার কাজের জন্য তিনি ২০১৩ সালে নজরুল মেলায় আজীবন সম্মাননা লাভ করেন। তিনি তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বড় ভাই মোস্তফা কামাল ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি। তার বোন ফেরদৌসী রহমান একজন সুরকার ও সঙ্গীতশিল্পী। আব্বাসী ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতজ্ঞ ওস্তাদ মুহম্মদ হোসেন খসরু এবং ওস্তাদ গুল মোহাম্মদ খাঁর নিকট সঙ্গীতের তালিম গ্রহণ করেন। তিনি মোট ৫০টি বই রচনা/সম্পাদনা করেন। তিনি ভাওয়াইয়া গানের উপর দুটি বই প্রকাশ করেন যার মধ্যে ১২০০ গানের উল্লেখ রয়েছে। তিনি আমার ঠিকানা এবং ভরা নদীর বাঁকে টেলিভিশন অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেছেন। অনুষ্ঠান দুটি বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হত।