"৭১- এর দশ মাস" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ ব্যক্তিগত সংগ্রহ, গ্রন্থাগারে ও সকল শ্রেণীর পাঠকের একাত্তরের ইতিহাস জানার জন্য ‘একাত্তরের দশমাস’ এ বইটিই যথেষ্ট। ‘লেখক রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদী' তাঁর নৈর্ব্যত্তিক দৃষ্টিভংগীতে নির্মোহ হয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের দিনলিপি নির্মাণ করেছেন। তার এ গ্রন্থে ১৯৭১'এর মার্চ থেকে ১৯৭২ এর ১০ই জানুয়ারী পর্যন্ত ঘটনা কালানুক্রমিক বর্ণিত। গ্রন্থে লেখক মন্নয় নন, তন্ময়। ঘটনাকে তিনি তুলে ধরেছেন ঘটনার মত করে। নিজে জড়িয়ে যাননি তার সাথে। এই দূর থেকে দেখার মধ্যে তথ্যকে তুলে ধরার আন্তরিকতা জড়িত হয়েছে। ডায়েরীধর্মী কালানুক্রমিক এ রচনা আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন স্মৃতিকে যেমন জাগ্রত করে তুলবে, তেমনি পথনির্দেশক হবে আগামী দিনের গবেষণাকর্মী এবং আজকের তরুণ প্রজন্মের জন্য। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে যেসব প্রকাশনা রয়েছে। এ বইটি সেক্ষেত্রে পাঠকের সহায়ক সূত্র হিসেবে বহু অজানা তথ্যের জিজ্ঞাসা ও প্রশ্নের নিরসনে সাহায্য করবে। এই বইটি ইতিহাসের সুবিন্যাস্ত উপাদান, দিকদর্শন, সশস্ত্র যুদ্ধের কাহিনী, পরাশক্তির ভূমিকাসহ পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস কাঠামাে হিসেবে পরিগণিত হবে।
রবীন্দ্র নাথ ত্রিবেদী (জন্ম শেরশাহী, মালদা, মাতুলালয়ে ১০ মার্চ ১৯৪৪, শুক্রবার ২৭ ফায়ূন ১৩৫০,দোলপূর্ণিমা ;পৈত্রিক নিবাস তালমা, ফরিদপুর)। ফরিদপুর জেলা স্কুল, রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র ও ভারতের মাদুরাই কামরাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোেষ্ট গ্রাজুয়েশন এবং সাংবাদিকতায় উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন। বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সদস্য, বাংলাদেশ সরকারের অবসর প্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব (ও এস ডি)। তিনি গবেষক,মুক্তিযুদ্ধের লেখক ও কলামিষ্ট হিসাবে দেশে ও বিদেশে পরিচিত। বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের ও মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠায় তিনি একজন সংগঠক-মুক্তিযােদ্ধা কর্মকর্তা। একাত্তুরে ১০ এপ্রিল ফরিদপুরে গােপন বৈঠকের পর জনাব আব্দুর রব সেরনিয়ামত এমএনএ , ফণী মজুমদার এমপিএ এবং এডভােকেট ইউসুফ হােসেন হুমায়ুন সহ তিনি প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ সাথে মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র ও কৌশল নিয়ে আলােচনা জন্য ১৫ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে কলকাতায় পৌঁছেন। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার শপথগ্রহণ ও ১৮ এপ্রিল কলকাতাস্থ পাকিস্তানী উপ-দূতাবাস প্রধান জনাব হােসেন আলীর বাংলাদেশের স্বাধীনতা পক্ষে প্রথম বাংলাদেশ মিশন ঘােষণা অনুষ্ঠানে ছাত্রনেতা নুর-এ-আলম সিদ্দিকীসহ সক্রিয়ভাবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান মহােদয়ের জনসংযোেগ ও শরণার্থী সাহায্য বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামান মহােদয়ের নির্দেশে কলকাতাস্থ বাংলাদেশ মিশন ও ভারত সরকার থেকে যশাের জেলা প্রশাসনে রিলিফ, যানবাহন, সরবরাহ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসনে বিশেষ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সংশিষ্ট তথ্য অফিসার পদে দায়িত্ব পালন করেন । ১৬ আগষ্ট -৭ নভেম্বর ১৯৭৫ রবীন্দ্র নাথ ত্রিবেদী বঙ্গভবনে তথ্য অফিসার দায়িত্ব পালন করেন। তার সেসব দিনের অভিজ্ঞতা সম্প্রতি প্রকাশিত ‘মার্ডার মেইহাম এন্ড পলিটিকস্ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বইয়ে প্রকাশ করেছেন। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি জনাব সাহাবুদ্দীন আহমদের প্রেস সচিব (১৯৯৯-২০০১) ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অতিরিক্ত প্রেস সচিব (১৯৯৭-১৯৯৮) পদে দায়িত্ব। পালন করেছিলেন।