"শিশুর হাতে খড়ি" বইটির 'দুটি কথা' অংশ থেকে নেয়াঃ বিশ্বের নানা গবেষনায় দেখা গেছে যে, শূন্য থেকে সাড়ে তিন বছর বয়সের মধ্যেই শিশুর মস্তিকের গঠণ পক্রিয়া প্রায় শেষ হয়ে যায়। তাই জন্মের পর থেকেই শিশুদের যথােপযুক্তভাবে গড়ে তুলতে পারলে বড় হয়ে ছেলে-মেয়েদের সমস্যা অনেক কমে যায়, তারা সুন্দর করে জীবনে গড়ে নিতে পারে। ২০০৫ সালে আমার দ্বিতীয় সন্তানের আগমনী বার্তা পাবার পর থেকে নবজাত শিশুর ‘হাতে খড়ি’র সবচেয়ে উপযুক্ত উপায় কী তা নিয়ে দীর্ঘ চিন্তা ও আশেপাশের অনেক শিশুর আচরণ নিয়ে প্রায় তিন/চার বছর গবেষনা করেছি। দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পত্রিকা, জার্নাল, ইন্টারনেট, ইত্যাদি এবং আমাদের প্রথম সন্তান লালনপালনের বাস্তব সব অভিজ্ঞতা মিলিয়ে যা পেয়েছি তা থেকে আমাদের দেশের শূণ্য থেকে সাড়ে তিন বছর বয়সী শিশুদের হাতে খড়ি দেবার উপযােগী পরামর্শগুলাে বইয়ের আকারে প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি। আমার এ বইতে শিশু। শিক্ষার পরিবেশ, উপযুক্ত বই নির্বাচন ও শিক্ষার কৌশলসহ নানা দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এ বইতে মাঝে মাঝে দ্বিরুক্তি লক্ষ্য করা গেলেও আসলে বিষয়ের গুরুত্ব বােঝাতে গিয়ে এমনটি হয়েছে। কোন কোন প্যারা শূন্য থেকে সাড়ে তিন বছর বয়সী শিশুর আদৌ উপযােগী কি-না এমন প্রশ্ন দেখা দিতে পারে। গভীর মনােযােগ দিয়ে পড়লে সেটা পরিষ্কার হবে বলে আমার বিশ্বাস। জীবনের প্রয়ােজনে যৌথ পরিবার ভেঙ্গে আমরা খুব ছােট পরিবারে বিভক্ত হয়ে পড়েছি তাই বর্তমানে অভিজ্ঞ মুরুব্বীর সাহায্য সহযােগিতা গ্রহনের তেমন সুযােগ নেই বললেই চলে। এমতাবস্থায় আমাদের শিশুদের হাতে খড়ি দিতে এ বই। কোন সেট প্রেসক্রিপশন নয়, তবে অনেকের উপকারে আসতে পারে। আমার সন্তানের মত সব সন্তানই তাদের বাবা-মা’র কাছে প্রিয়। সবার মতামত নিয়ে এ বইয়ের কলেবর ও মান দুটোই বৃদ্ধি হবে বলে আমার দৃঢ় প্রত্যাশা। আমার অভিজ্ঞতার সামান্যতম কিছু যদি বাবা-মা’র প্রিয় সন্তানকে মানুষ করতে কাজে আসে তাহলে আমার প্রচেষ্টা সফল হবে।