"প্রেতযোনি" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: চোদ্দো বছর বয়সে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর ছেড়েছিল নীপা। সুন্দরী নীপা স্বপ্ন দেখত ফিল্মের নায়িকার মতাে রঙিন জীবন। কিন্তু তার প্রেমিক তাকে বাড়ির বউ করে এনে ফেলল এক মধ্যযুগীয় পরিবারে যেখানে ঘরের বন্ধুদের ব্যবহার করা হয় যৌনদাসীর মতাে। চোদ্দো না পেরােতেই মা হয়ে গেল নীপা। শাশুড়ি ছেলে চেয়েছিলেন। সে ছেলে দিল। নীপার কেবল স্তন্যদানের অধিকার। এক সন্ধ্যায় সে ছেলে ফেলে পালাল বাপ-মায়ের নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে। নীপা স্বাধীন হল। কিন্তু জীবন নিজস্ব দাবি নিয়ে তাড়িত করতে লাগল তাকে। এক ছেলের মাকে বিবাহ করার লােক সমাজে বিরল। নীপা অধীর হয়ে উঠল। বড়দি নীতা ও রঞ্জনের গােপন ভালবাসাটি তার চোখে ধরা পড়লেও, বয়সে প্রায় দ্বিগুণ রঞ্জনকেই সে অধিকার করে বসল। রঞ্জন মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক। সমাজসেবক। নীপা এ জীবনেও খুশি রইল না বেশিদিন। রঙিন জীবনের আকর্ষণে রঞ্জনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমেরিকায় চলে গেল দেশের পাট গুটিয়ে। সেখানে শুরু হল কঠোর সংগ্রাম। আমেরিকার প্রাচুর্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রাণান্ত প্রয়াসে, মার্কিনি সংস্কৃতিতে অচল রঞ্জনকে বােঝা মনে হতে লাগল নীপার। প্রায় ছেলের বয়সি কল্লোলের প্রেমে পড়ল সে। নীপার স্বপ্ন সফল হল। কল্লোল প্রতিষ্ঠিত, প্রেমিক, তরুণ। সে কল্লোলকে বিয়ে করল। নীপা আবার গর্ভবতী। কল্লোলের সন্তান সে ধারণ করেছে। তার ও রঞ্জনের মেয়ে নীনার বয়স এখন প্রায় চোদ্দো। আমেরিকার জীবনে অভ্যস্ত নীনা। এক সকালে জানাল সে মা হতে চলেছে, তার সন্তানের পিতার সম্ভাব্য নাম শুনে বজ্রাহত নীপা। আবার পালাল তার প্রার্থিত জীবন থেকে। প্রেতযােনি উপন্যাস এক চির অতৃপ্তির নিবিড় বাস্তব আখ্যান।
Tilottama Majumder জন্ম: ১১ জানুয়ারি ১৯৬৬, উত্তরবঙ্গ। কালচিনি চা-বাগানে ইউনিয়ন একাডেমি স্কুলে পড়াশোনা। ১৯৮৫-তে স্নাতক স্তরে পড়তে আসেন কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে। ১৯৯৩ থেকে লিখছেন। পরিবারের সকলেই সাহিত্যচর্চা করেন। আনন্দ পাবলিশার্সে সম্পাদনাকর্মের সঙ্গে যুক্ত। প্রথম উপন্যাস: মানুষশাবকের কথা। ‘বসুধারা’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার। অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আছে রাজপাট, একতারা, চাঁদের গায়ে চাঁদ ইত্যাদি। ভালবাসেন গান ও ভ্রমণ।