"রাজপাট ” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: পাপপ্রক্ষালনকারিণী গঙ্গায় যুগের পর যুগ ধরে সংবাহিত হয় চলেছে ভারতীয় জীবন, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য। রুদ্রাণী গঙ্গা চিরপ্রণম্যা, পূজিতা, সৃষ্টি ও ধ্বংসের কারিকা! গঙ্গার পুণ্যজলসিঞ্চিত ভারতের এক প্রদেশ এই পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যপূর্ণ জেলা মুর্শিদাবাদ। গঙ্গা এখানে সাগর অভিমুখে প্রবহমান। তার বহু উপনদী এবং শাখানদী শিরা-উপশিরার মতাে ছড়িয়ে আছে মুর্শিদাবাদ জুড়ে। তারা এই জেলার জনজীবনে দেয় জল, দেয় পলি এবং উর্বরতা, দেয় ফসলের আরাধন, প্রাণের আশ্বাস। এবং দেয় মৃত্যু ও বিধ্বংস। কেননা এই নদ-নদী যত, স্বধর্মে লিখে দেয় সৃষ্টি ও সংহার। মানুষের সভ্যতা তবু তারই কাছে প্রণত। গঙ্গাভূমি এই উপন্যাসের ক্রোড়দায়িনী। তার সব শাখানদী-উপনদী, তার হতে সৃষ্ট খাল-বিলের পাশে পাশে উৎসারিত শহর-গ্রামের মানবজীবন এ রচনায় ধরা আছে। এই শহর-গ্রামের পথে পথে ঘুরে বেড়ায় ময়না বৈষ্ণবী। অপার প্রেমে সে ভালবাসে। অসীম চোখে দেখে নেয় মাটিমাখা মানুষের দুঃখ-সুখ। কৃষ্ণভজনার পুণ্যে পুণ্যবতী ময়না বৈষ্ণবীর দৃষ্টি তবুও পড়ে সেই পতিত কারবারে। মহাপ্রভু গােপীদাসের আশ্রমে ঈশ্বর আরাধনার ছদ্মবেশে সক্রিয় আছে নারীপাচার চক্র। এই সন্ধান ব্যথিত করে তাকে। বিদ্রোহী করে। প্রতিকার চেয়ে, প্রতিবাদের আগুন-ভরা কলস সে সমর্পণ করে সিদ্ধার্থকে। সিদ্ধার্থ। বন্দ্যোপাধ্যায় তরুণ রাজনৈতিক কর্মী। সে ন্যায়নিষ্ঠ, মানবপ্রেমী, নির্ভীক, গভীরহৃদয়। দেশপ্রেম তার বেঁচে থাকার প্রেরণা। ভূগােল, ইতিহাস, ধর্ম, সংস্কৃতি, অর্থনীতি এবং মানবিক সম্পর্কের গভীর উপাখ্যান।
Tilottama Majumder জন্ম: ১১ জানুয়ারি ১৯৬৬, উত্তরবঙ্গ। কালচিনি চা-বাগানে ইউনিয়ন একাডেমি স্কুলে পড়াশোনা। ১৯৮৫-তে স্নাতক স্তরে পড়তে আসেন কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে। ১৯৯৩ থেকে লিখছেন। পরিবারের সকলেই সাহিত্যচর্চা করেন। আনন্দ পাবলিশার্সে সম্পাদনাকর্মের সঙ্গে যুক্ত। প্রথম উপন্যাস: মানুষশাবকের কথা। ‘বসুধারা’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার। অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে আছে রাজপাট, একতারা, চাঁদের গায়ে চাঁদ ইত্যাদি। ভালবাসেন গান ও ভ্রমণ।