"যে গল্পে হৃদয় গলে (২য় খণ্ড)" বইটির 'দুটি কথা' অংশ থেকে নেয়াঃ চরিত্র মানুষের অমূল্য সম্পদ। চরিত্রহীন মানুষ পশুর সমান। একজন মানুষের মধ্যে যখন সততা, সত্যবাদিতা, বিশ্বস্ততা, খােদাভীরুতা, পরােপকার, ন্যায়পরায়নতা, ধৈর্য, সহনশীলতা, ক্ষমা ও ত্যাগের ন্যায় প্রভৃতি মানবীয় গুণাবলীর সমন্বয় ঘটে তখনই তাকে চরিত্রবান বলা হয়। চরিত্রবান ব্যক্তির উন্নত ব্যবহার ও শীতল পরশে মানুষ সকল দুঃখ দুর্দশা নিমিষেই ভুলে যায়। দুনিয়াতেই লাভ করে অনাবিল স্বর্গীয় সুখ। আমাদের বর্তমান সমাজের ক্রমবর্ধমান চারিত্রিক অবক্ষয় রােধ করে একটি আদর্শ ও চরিত্রবান জাতি গঠন করার উদ্দেশ্যেই আমার এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। এ বইতে আমি হৃদয়ের সমস্ত ভালবাসা ও দরদ দিয়ে সহজ, সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় বিভিন্ন হৃদয়বিদারক ও মর্মস্পর্শী সত্য ঘটনাগুলাে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে উল্লেখ করেছি। পাশাপাশি ক্ষেত্র বিশেষে শিক্ষা গ্রহণের সুবিধার্থে কুরআন ও হাদীসের আলােকে সংশ্লিষ্ট ঘটনার শিক্ষণীয় দিকগুলাে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তােলার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। তাছাড়া এ বইয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলমানদের উপর যে জঘন্য মানবতা বিরােধী অপকর্ম ও নৃশংস নির্যাতন চালানাে হয়েছে তার কিছু খন্ড চিত্রও তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। উদ্দেশ্য হল, মুসলিম সমাজের সর্বোচ্চ স্তর থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত সকল স্তরের মানুষের মধ্যে এ ধারণা বদ্ধমূল করে দেয়া যে, এখনই যদি আমরা জেহাদী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এই বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতার কার্যকর বদলা নিতে উদ্যোগী না হই, তাহলে মনে রাখতে হবে, অদূর ভবিষ্যতে আমাদের জন্য আরও মারাত্মক পরিণতি অপেক্ষা করছে।
আল্লাহভীরু আলেম, জনপ্রিয় সিরিজ লেখক, দায়ী ও মাদরাসা পরিচালক। জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩, বিবাড়িয়া সদরের ভাদুঘর গ্রামে। জেনারেল শিক্ষায় মাস্টার্স ডিগ্রির পাশাপাশি কওমি মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন। ক্লাস সেভেনে অধ্যয়নকালে তিনি দ্বীনি কাজের সাথে সম্পৃক্ত হোন। তখন থেকে আলেমদের বিশেষ ফজিলত ও উচ্চ মর্যাদার কথা শুনে আলেম হওয়ার প্রতি তীব্র আকাঙ্কা পোষণ করেন।ফলে এইচ এসসি পরীক্ষার পর তিনি ঢাকার মাদরাসা দারুর রাশাদে ভর্তি হোন। সেখান থেকে ১৯৯৫ সালে দাওারায়ে হাদীস সম্পন্ন করেন। ১৯৯৬ সালে কয়েকমাস হাটহাজারী মাদরাসায় বিভিন্ন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। সে বছরেই তিনি মাদরাসা দারুর রাশাদ-এর শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হোন। পরবর্তীতে তিনি নরসিংদীর দারুল উলুম দত্তপাড়া, আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা মাদরাসা ও নূরিয়া ইসলামিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। বর্তমানে তিনি নরসিংদীর তালীমুল কুরআন হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। আত্নশুদ্ধির মেহনতের জন্য তিনি জামিয়াতু ইবরাহীম সাইনবোর্ড-এর প্রিন্সিপাল ও শায়খুল হাদিস মুফতি শফিকুল ইসলাম দামাত বারাকাতুহুম এর নিকট ২০০৩ সালে সবক নেন। এবং ২০১৭ সালে এযাযতপ্রাপ্ত খলীফা হোন। মুহাম্মাদ মুফিজুল ইসলামের সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি ‘হৃদয় গলে সিরিজ’ এর লেখক। বাংলাবাসার ইতিহাসে এমন জনপ্রিয় দীর্ঘ গল্পসিরিজ পূর্বে প্রকাশিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। ইতিমধ্যে এই সিরিজের ৮৫ টি বই বের হয়েছে। অক্টোবর ২০০২ ‘যে গল্পে হৃদয় গলে’ এর মাধ্যমে এই সিরিজের শুভ সুচনা হয়। সিরিজের এই ধারা চলমান। লেখকের ইচ্ছা একশ নাম্বারে তিনি সমাপ্ত টানবেন। তার প্রথম প্রকাশিত বই ‘উস্তাদ শাগরেদের হক ও তরবীয়তের তরীকা’ (আল কাউসার প্রকাশনি ১১৯৭), তাছাড়া তার রচিত ও অনূদিত বেশ কিছু বই প্রকাশিত হযেছে।