"আমার ছেলেবেলা" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ ‘আমার ছেলেবেলা’ গ্রন্থে আছে মহান রুশ সাহিত্যিক মাক্সিম গাের্কির জীবনপ্রভাতের কাহিনী। এর নায়ক বাচ্চা আলিওশা পেশকভ সতৃষ্ণে চেয়ে দেখছে তার চারিপাশের জগৎটায়। প্রাকবিপ্লব রাশিয়ার সে জগৎ বিচিত্র, জটিল এবং নিষ্ঠুর। এই আত্মজীবনীমূলক বিবরণ দিয়েই শুরু হয়েছে গাের্কির সুবিখ্যাত তিনখণ্ড আখ্যান ‘আমার ছেলেবেলা’, ‘পৃথিবীর পথে’, ‘পৃথিবীর পাঠশালায়’, যা তিনি শেষ করেন এ শতকের বিশের দশকে। সােভিয়েত সাহিত্যের জনক মাক্সিম গাের্কি’র (১৮৬৮-১৯৩৬) অন্যান্য রচনার মতাে এ বইটিও মানুষের ওপর সাবেগ বিশ্বাসে, মানুষের অন্তরের সৌন্দর্য ও মহত্ত্বের উত্তাপে উষ্ণ। বর্তমান গ্রন্থ ‘আমার ছেলেবেলায় শিশু আলিশা প্রাক্-বিপ্লব রাশিয়ার শিশুদের প্রতিনিধি, অত্যন্ত দুঃখকষ্ট আর অতীব দারিদ্র্যের মধ্যে দিন-কাটিয়ে-আসা সত্ত্বেও তার চিরন্তন শিশুসত্তা ধীরে ধীরে বিকশিত হয়ে ক্রমশ জীবনমুখী হয়ে উঠেছে; মানবিক গুণাবলি তার মধ্যে দানা বাঁধতে শুরু করলেও পারিপার্শ্বিকের চাপে শিশু আলিওশা’র আচরণ কখনও কখনও বয়স্ক মানুষের কাছাকাছি প্রতীয়মান হয়। তৎকালীন রাশিয়ার নিষ্ঠুর, জটিল ও কঠোর সামাজিক চিত্রের পাশাপাশি একটি শিশুমনের চাওয়া-পাওয়া ও আকুতির বলিষ্ঠ রূপায়ণ মাক্সিম গাের্কি’র এই আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থটি সমগ্র বিশ্বসাহিত্যে এক অনন্য সৃষ্টি।
(মার্চ ২৮, ১৮৬৮ – জুন ১৮, ১৯৩৬) বিখ্যাত রুশ সাহিত্যক। তিনি নিজেই তার সাহিত্যক ছদ্মনাম হেসেবে বেছে নেন 'গোর্কি' অর্থাৎ 'তেতো' নামকে। তার অনেক বিখ্যাত রচনার মধ্যে মা একটি কালজয়ী উপন্যাস। প্রথম জীবন মাক্সিম গোর্কি নিঞ্জি নভগরদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৯ বছর বয়সে পিতৃমাতৃহীন হন। ১৮৮০ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি তার দাদীমাকে খুঁজতে গৃহ ত্যাগ করেন। ১৮৮৭ সালে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পায়ে হেঁটে সমগ্র রাশিয়া ভ্রমন করেন। তিনি ১৮ জুন ১৯৩৬ (৬৮ বছর) সালে মৃত্যু বরণ করেন।