এই বই শুরু করার আগে যে কবিগুরুটিকে যথাবিহিত প্রণাম জানাতে চাই তার নাম স্বামী বিবেকানন্দ। তিনি নবভারতের অন্যতম স্রষ্টা ; অধ্যাত্মজগতে শঙ্করাচার্য ও রামানুজের সঙ্গে একই নিঃশ্বাসে তার নাম উচ্চারিত হয়, আমাদের এই যুগে ক্লেদাক্ত হিন্দুধর্মকে কলুষমুক্ত করে তিনি স্বমহিমায় পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এইসব কারণে বিবেকানন্দের চরণচর্চা করছি না। করছি সাহিত্য-রচয়িতা হিসেবে প্রণাম জানাচ্ছি বাংলার শ্রেষ্ঠ ভ্রমণসাহিত্যকারকে। বাংলা ভ্রমণসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ লেখক ? শুধু শ্রেষ্ঠ নন, আমি তাকে নির্দ্বিধায় সর্বশ্রেষ্ঠ মনে করি। সেই যে ১৮৯৯ সালে কলকাতা থেকে গােলকোণ্ডা জাহাজযােগে পাশ্চাত্যদেশ যাত্রাপথে গঙ্গাবক্ষে তিনি পরিব্রাজক’-এর প্রথম লাইন রচনা করলেন। তারপর থেকে বাংলা ভ্রমণসাহিত্য আর এক রইলাে না। পরিব্রাজক’ ও ‘প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য লিখিত হবার পর সমগ্র এক শতাব্দীর তিন-চতুর্থাংশ অতিক্রান্ত হলাে, বাণীর বরপুত্ররা এই বিংশ শতাব্দীতে বাংলা ভ্রমণসাহিত্যকে নানাভাবে সমৃদ্ধ করলেন, কিন্তু বিবেকানন্দ আজও অদ্বিতীয়। কী স্টাইলে, কী সরসতায়, কী অন্তদৃষ্টিতে, কী আত্মবিশ্বাসে, কী গভীর মানবপ্রেমে পরিব্রাজকের’ লেখক আজও বাংলা ভ্রমণসাহিত্যের মুকুটমণি হয়ে রইলেন।
শংকর একজন ভারতীয় বাঙালি লেখক। তাঁর আসল নাম মণিশংকর মুখোপাধ্যায়। তাঁর প্রথম বই প্রকাশিত হয় ১৯৫৫ সালে। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল চৌরঙ্গী, সীমাবদ্ধ এবং জন অরণ্য। এই তিনটি বই নিয়ে চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়েছে। ২০১৬ সালে তিনি উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট সম্মানে ভূষিত হন।