তাহলে আমি কাজান শহরে চলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে-কম কথা নয়! বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার চিন্তাটা আমার মাথায় ঢুকিয়েছিল নিকোলাই ইয়েভরেইনভ নামে ইস্কুলের এক ছাত্র। ইয়েভরেইনভকে দেখলেই ভাল লাগে, সে খুবই প্রিয়দর্শন তরুণ, মেয়েদের মতো কোমল তার চোখদুটো। আমার সঙ্গে একই বাড়ির চিলে- কোঠায় থেকেছে সে। প্রায়ই আমার বগলে এক-আধখানা বই দেখে দেখে আমার সম্পর্কে ওর এত আগ্রহ জন্মায় যে আলাপ-পরিচয়ও করে নেয়। তারপর দু-দিন না যেতেই সে আমার উঠে-পড়ে বোঝাতে থাকে আমার মধ্যে নাকি 'অসাধারণ পান্ডিত্যের প্রকৃতিদত্ত সম্ভাবনা' রয়েছে। সজোর সুললিত ভঙ্গিতে মাথার লম্বা চুলগুলো ঝাঁকুনি দিয়ে পিছনে সরিয়ে সে বলত, 'জ্ঞানবিজ্ঞানের সেবার জন্যই প্রকৃতি তোমায় সৃষ্টি করেছে।' খরগোশ হিসেবেও কেউ যে জ্ঞানবিজ্ঞানের সেবা করতে পারে সে-বোধ তখনও আমার জন্মায়নি, এদিকে ইয়েভরেইনভ কিন্তু আমায় জলের মতো সোজা করে বুঝিয়ে দিল যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নাকি ঠিক আমার মতো ছেলেদেরই অভাব রয়েছে। পন্ডিত মিখাইল লমনোসভের উজ্জ্বল দৃষ্টান্তটাও সঙ্গে সঙ্গে তুলে ধরল সে। ইয়েভরেইনভ বলল, কাজানে তার সঙ্গেই থেকে আমি শরৎ আর শীতের সময়টায় ইস্কুলের পাঠ একেবারে সড়গড় করে ফেলব, তারপর আমার 'দু-চারটে' পরীক্ষা দিতে হবে-'দু-
(মার্চ ২৮, ১৮৬৮ – জুন ১৮, ১৯৩৬) বিখ্যাত রুশ সাহিত্যক। তিনি নিজেই তার সাহিত্যক ছদ্মনাম হেসেবে বেছে নেন 'গোর্কি' অর্থাৎ 'তেতো' নামকে। তার অনেক বিখ্যাত রচনার মধ্যে মা একটি কালজয়ী উপন্যাস। প্রথম জীবন মাক্সিম গোর্কি নিঞ্জি নভগরদ এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ৯ বছর বয়সে পিতৃমাতৃহীন হন। ১৮৮০ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি তার দাদীমাকে খুঁজতে গৃহ ত্যাগ করেন। ১৮৮৭ সালে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান এবং দীর্ঘ ৫ বছর ধরে পায়ে হেঁটে সমগ্র রাশিয়া ভ্রমন করেন। তিনি ১৮ জুন ১৯৩৬ (৬৮ বছর) সালে মৃত্যু বরণ করেন।