ভূমিকা বিংশ শতাব্দীকে বলা হয় “Age of Anxiety” এবং যেসব পরিস্থিতি মানুষকে বেশ চিন্তাগ্রস্ত করে তোলে সেগুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান হচ্ছে হাঁটুর সমস্যা বিশেষ করে বাতের ব্যথা। শিশু থেকে যুবক-যুবতী, প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা কেউই হাঁটুর নানান সমস্যা থেকে রেহাই পান না এবং আমার দীর্ঘ চিকিৎসা জীবনের অভিজ্ঞতায় লক্ষ করেছি যে কেউ কেউ হাঁটুর অসহ্য ব্যথায় বেঁচে থাকার ইচ্ছা পর্যন্ত হারিয়ে ফেলেছেন। আঘাত, জন্মগত উপসর্গ, নানান রোগ বিশেষ করে বাত, কর্কট রোগ বা ক্যানসার ইত্যাদি হাঁটুকে আক্রমণ করে মারাত্মক সব পরিস্থিতির উদ্রেক করে। তবে সবচেয়ে বেশি সমস্যা দেখি পঞ্চাশোর্ধ্ব পুরুষ ও মহিলাদের অবক্ষয় জনিত হাঁটুর বাত। বাতের উপর বই আগেই লিখেছি কিন্তু হাঁটুর সমস্যা এত বেশি দেখছি যে হাঁটুর উপর এই বইটি লেখার তাগিদ অনুভব করেই এটি প্রকাশ করলাম । কেন হাঁটুর নানান সমস্যা দেখা দেয়, কিভাবে ওইসব সমস্যার মোকাবিলা করা যাবে বিশেষ করে ফিজিওথেরাপি ও অত্যাধুনিক ওষুধপত্র ইত্যাদির মাধ্যমে সেসবই আলোচিত হয়েছে এই পুস্তকে। সঙ্গে সঙ্গে কীভাবে দেহের ওজন কমিয়ে, হাঁটুর মাংসপেশি, লিগামেন্ট ইত্যাদির শক্তি বা স্ট্রেংথ বৃদ্ধি করে হাঁটুকে সুস্থ-সবল রেখে কর্মক্ষম থাকা যায় সেসবও বোঝানো হয়েছে। হাঁটুর অবক্ষয় বেশ ভোগায় তাই সে সম্পর্কেও আলোকপাত করা হয়েছে। হাঁটুতে ক্যানসার হলে মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সেজন্য ক্যানসারের নানাদিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ফিজিওথেরাপির ব্যাপারে বিশদ আলোচনা করা হয়েছে কারণ এব্যাপারে বিশেষ জ্ঞান থাকা দরকার। এছাড়া অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি এমনকি মডার্ন অপারেশানের মাধ্যমে কিভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব তাও বলা হয়েছে। দেহের ওজন সঠিক মাত্রায় রেখে হাঁটুর উপর চাপ কমিয়ে কিভাবে দৈনন্দিন কাজকর্ম করা যাবে সে ব্যাপারেও আলোকপাত করা হয়েছে এই বইটিতে। দে'জ পাবলিশিং-এর কর্ণধার শ্রীসুধাংশুশেখর দে ও ওই প্রতিষ্ঠানের যাঁদের আন্তরিক ও অনলস প্রচেষ্টায় বইটির প্রকাশ সম্ভব হয়েছে তাদের জানাই আমার কৃতজ্ঞতা। পরিশেষে জানাই যে আমার দীর্ঘ চিকিৎসক জীবনের অভিজ্ঞতায় কিভাবে অত্যাধুনিক ঔষধ ও শল্যচিকিৎসার মাধ্যমে সত্বর হাঁটুর বাত ও অন্যান্য সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে সেসবই বোঝানো হয়েছে। তাই এই বইটি পড়ে রোগীরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন বলেই আশা রাখছি। হাঁটুর ব্যায়াম ও অন্যান্য বিষয়গুলির স্কেচ শেষেরদিকে দেওয়া হয়েছে।