কামনার কথা বলে, কণ্ঠেরই সংগীত কাহিনির ছায়া ফেলে, তাহারই ইঙ্গিত- সৃষ্টির বিপুল বৈচিত্রময়তায় ঠাসা মানব চরিত্র! এমনই এক ব্যতিক্রমী অবয়বে, বিচিত্র খেয়ালের, বৈচিত্র বিলাসী-“আমাদের বুলু ভাই”। কাট-খােট্টা আকার-আয়তনের এই মানুষটার হৃদয় জুড়িয়া ছিল, মহানুভবতা এবং সীমাহীন মহত্বের প্রস্রবণ। অপরের আপদে-বিপদে, অন্যের যাতনা-যন্ত্রণায়, যে কাহারও ব্যাথা-বেদনায় নিঃস্বার্থ ঝাপাইয়া পড়ায় তাহার কোনাে জুড়ি নাই। আবার মজা করিবার বেলায়, যে কাহাকেও নাজেহাল করিতে-নীতি, ধর্ম বা ন্যায়শাস্ত্রের কোননা বালাই কিংবা পরােয়া তাহার থাকে না। কখনও তিনি কাঁদিয়া উঠিতেন কুকুরের কান্না-কাতরতায়, কখনও বা মাতিয়া উঠেন, তাহাদেরকেই চরম উৎপাতে অথবা অকাতর নিধন সাধনে-পক্ষীকূলে। তাহার বাড়ি আছে বৃহৎ-ঘর আছে বড়। তবে তাহারে টানিতে পারে না কোনােকিছুই। লােভ তাহার বিন্দু। মােহ তাহার শূন্য। লাভ-ক্ষতির খতিয়ান খাতা তিনি বগলদাবা করিয়া ফিরেন না। বড়লােক বাবার সয়-সম্পদের খোঁজ-খবরও তিনি রাখেন না। তাহার যেন কিছুই নাই-কিছুরই যেন অভাবও নাই। সকলেই তাহারে ভালােবাসে-পাইলে তাহাকে আমােদে হাসে। তিনিও ছুটিয়া যান সবারই কাছে, কিন্তু কোথায় তিনি ছুটিয়া ছিলেন, কোথায় তিনি উঠিয়াছেন-তাহারই কেবল থাকে না ঠিক-ঠিকানা সঠিক। আসলে শুধু তিনিই “আমাদের বুলু ভাই”!