'আসহাবে কাহাফ' বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ সৃষ্টির শুরু থেকে মানুষ পালিয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু ক’জনের কথা এসেছে পবিত্র কুরআনে! মূর্তিপূজার বিরোধিতা করায় বাদশাহর রোষে পড়ে এই যুবকদল। ক্ষমতা সব সময় সর্বগ্রাসী। সে তার নিজের ছায়াকেও আস্ত খেয়ে ফেলে। সাত যুবক তো রীতিমতো রাষ্ট্রদ্রোহী, রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। রাষ্ট্রের সমস্ত ক্ষোভ এখন তাদের ওপর। এক সময় ক্লান্ত যুবকদল একটা গুহায় আশ্রয় নেয়। ভ্রমণের ক্লান্তি গায়ে জড়িয়ে গুহার মধ্যে তারা সকলেই ঘুমিয়ে পড়ে। বলা হয়-যুবকেরা এমনভাবে ঘুমিয়েছিল যেন তাদের চোখগুলো খোলা, দেখে মনে হবে-তারা জেগেই আছে। ঠিক এভাবে তারা ঘুমালো টানা তিনশ’ নয় বছর। সময়ের পিঠে সময় ভাঁজ হয়ে বসে গেছে। অসংখ্যবার চন্দ্র-সূর্য্য গতি পাল্টেছে। মাটির হিংস্রতা থেকে বাঁচাতে তাদের পাশ ফেরানোর দায়িত্ব নিয়েছেন স্বয়ং পরম করুণাময়। এই ঘুম থামিয়ে দিয়েছিল সময় এবং শব্দের রহস্যময়তাকে। যে ঘুম একসময় ঘুমের পথ পাড়ি দিয়ে কেবল স্বপ্নেই দীর্ঘায়িত হচ্ছিলো। কিন্তু কুকুরটি? শেষ পর্যন্ত ঘুমভাঙা যুবকদের একজন বাজারে গিয়ে বুঝতে পারে ঘুমের ভেতরেই তারা কাটিয়েছে এতোটা বছর। অত্যাচারী বাদশাহ ততোদিনে তলিয়ে গেছে বিস্মৃতির অতলে। অচল হয়ে পড়েছে যুবকদলের পকেট থেকে বেরুনো মুদ্রা। সব জানার পর সবাই তাদের ফিরে আসতে বলে। কিন্তু এই পৃথিবী তাদের চেয়ে তিনশ’ বছরের বেশি এগিয়ে। এটা তাদের না ফেরার জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত কারণ। আবারো তারা ফিরে আসে গুহায়। প্রত্যাখ্যান হয় ওইসময়ের রাজার আমন্ত্রণও। তারপর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাদের আরো এক ঘুমপর্ব। আসহাবে কাহাফের ঘটনা মোটামুটি এ পর্যন্তই। কিন্তু এই ঘটনায় লুকিয়ে আছে শিক্ষার এক বিশাল ভা-ার। মুখরোচক এই কাহিনি আমাদের সমাজে বেশ প্রচলিত। বাজারি বক্তারা মাহফিল মাতিয়ে রাখেন এই কাহিনি বলে। সম্প্রতি এই ঘটনাকে উপজীব্য করে টেলিভিশন সিরিয়ালও নির্মিত হয়েছে আমাদের দেশে। কিন্তু এই ঘটনার মূলে যে মহান শিক্ষা লুকিয়ে আছে সে বিষয়টি সবার আড়ালেই থেকে যায়। অথচ কুরআনে এই ঘটনার উল্লেখই করা হয়েছে এটা থেকে শিক্ষা নেয়ার জন্য। গ্রন্থটিতে আসহাবে কাহাফের আদ্যোপান্ত ঘটনার পাশাপাশি শিক্ষনীয় বিষয়গুলোও উঠে এসেছে সাবলীলভাবে।
এ সময়ের প্রতিভাদীপ্ত লেখক ও অনুবাদক। লেখালেখির জগতে পদার্পণ শৈশবকালেই। শিক্ষা ক্ষেত্রে জামিয়া ইসলামিয়া পটিয়ায় দাওরায়ে হাদীস সম্পন্ন করে ২০০২ সালে। জামিয়া ফারুকিয়া করাচি থেকে তিনি তাখাসসুস ফি উলুমিল ফিকহের ডিগ্রি নেন। নাজিরহাট বড় মাদরাসা থেকে সুদীর্ঘ দুই যুগেরও অধিককাল ধরে নিয়মিত প্রকাশিত মাসিক দাওয়াতুল হক পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ‘সুচিন্তা’ ও ‘শিকড়’ও তার সম্পাদিত সাময়িকী। এছাড়া নিরলসভাবে লিখে চলেছেন বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকায়। ১৯৮১ সালের ২৮ মার্চ চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জন্ম নেয়া বরেণ্য এই আলেমের ৪০ টির অধিক বই রয়েছে বাজারে। তাঁর মৌলিক বইয়ের মধ্যে রয়েছেÑ নাফ তীরের কান্না; স্বর্ণযুগের সম্রাট; অপরাধ : উৎস ও প্রতিকার; পুত্রের প্রতি পিতার পত্র ও উপদেশ; আসহাবে কাহাফ; দেহমনের পাপ; পড়ালেখার কলাকৌশল; ইসলামের দৃষ্টিতে হালাল হারাম।