|| উসমানি সাম্রাজ্যের ইতিহাস : দ্য অটোমান এম্পায়ার || হিজরি সপ্তম শতাব্দী। মোঙ্গলীয়দের আক্রমণে লণ্ডভণ্ড আব্বাসীয় সালতানাত। কনস্টান্টিনোপলের খ্রিষ্টানদের সাথে লড়াইয়ে রোমের সালজুক সালতানাতের প্রাণ ওষ্ঠাগত প্রায়। ইসলামি ইতিহাসের এক চরম দুর্যোগপূর্ণ সময়। ঠিক এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে মেঘের আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে হেসে ওঠে এক নবারুণ সূর্য। দিগ-দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে সেই সূর্যের দীপ্তি। ইসলামি সাম্রাজ্যের মেঘলা আকাশকে স্বচ্ছ এবং প্রখর রোদের আকাশে পরিণত করা সেই সূর্যের নাম ‘উসমানি সালতানাত’। ইসলামি ইতিহাসের এক সোনালি অধ্যায় জুড়ে ছড়িয়ে যে সালতানাতের ব্যাপ্তি। যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী দোর্দণ্ড প্রতাপের এবং ন্যায়নিষ্ঠার সাথে শাসন করে গেছেন মুসলিম বিশ্ব। একের পর এক রাজ্য বিজয় করে ইসলামকে করেছেন সমুন্নত এবং সম্প্রসারিত। সারা বিশ্ব যাদেরকে জানে ‘অটোমান সাম্রাজ্য’ নামে। দীর্ঘকাল যাদের কথা চর্চা হয়ে আসছে ইতিহাসের পাতায় পাতায়। কীভাবে উত্থান হলো এই মহা শক্তিশালী সালতানাতের? কী তাদের পরিচয়? কোথা থেকে তাদের আগমন? কীভাবেই বা এ মহাশক্তিশালী সাম্রাজ্যের পতন হলো? কীভাবে ধ্বংস হলো শত শত বছরের খিলাফতব্যবস্থা? প্রশ্নগুলো যদি আপনার মস্তিষ্কের দরজায় কড়া নাড়তে থাকে, তাহলে মেলে ধরুন "দ্য অটোমান এম্পায়ার" কে। আশা করি সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
ফকিহ, রাজনীতিক ও বিশ্বখ্যাত ইতিহাসগবেষক। ইসলামের ইতিহাসের উপর বিশ্লেষণধর্মী তাত্ত্বিক গ্রন্থ রচনা করে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছেন। এই মহা মনীষী ১৯৬৩ সনে লিবিয়ার বেনগাজি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা বেনগাজিতেই করেন। যৌবনের প্রারম্ভেই গাদ্দাফির প্রহসনের শিকার হয়ে শায়খ সাল্লাবি আট বছর বন্দি থাকেন। মুক্তি পাওয়ার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি সাউদি আরব চলে যান। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়া ও উসুলুদ্দিন বিভাগ থেকে ১৯৯৩ সনে অনার্স সম্পন্ন করেন। তারপর চলে যান সুদানের উম্মু দুরমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে উসুলুদ্দিন অনুষদের তাফসির ও উলুমুল কুরআন বিভাগ থেকে ১৯৯৬ সনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ১৯৯৯ সনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘ফিকহুত তামকিন ফিল কুরআনিল কারিম’। ড. আলি সাল্লাবির রাজনৈতিক দীক্ষাগুরু বিশ্বখ্যাত ফকিহ ও রাজনীতিক ড. ইউসুফ আল কারজাবি। কারজাবির সান্নিধ্য অর্জনে তিনি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে কাতার গমন করেন। নতুন ধারায় সিরাত ও ইসলামি ইতিহাসের তাত্ত্বিক গ্রন্থ রচনা করে ড. আলি সাল্লাবি অনুসন্ধিৎসু পাঠকের আস্থা ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। নবিজির পুর্ণাঙ্গ সিরাত, খুলাফায়ে রাশিদিনের জীবনী, উমাইয়া খিলাফত, আব্বাসি খিলাফত, উসমানি খিলাফতের উত্থান-পতনসহ ইসলামি ইতিহাসের সাড়ে তেরোশ বছরের ইতিহাস তিনি রচনা করেছেন। তা ছাড়া ইসলামি ইতিহাসে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করা ব্যক্তিদের নিয়ে তিনি আলাদা আলাদা গ্রন্থ রচনা করেছেন। ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবির রচনা শুধু ইতিহাসের গতানুগতিক ধারাবর্ণনা নয়; তাঁর রচনায় রয়েছে বিশুদ্ধতার প্রামাণিক গ্রহণযোগ্যতা, জটিল-কঠিন বিষয়ের সাবলীল উপস্থাপনা ও ইতিহাসের আঁকবাঁকের সঙ্গে সমকালীন অবস্থার তুলনীয় শিক্ষা। এই মহা মনীষী সিরাত, ইতিহাস, ফিকহ ও উলুমুল কুরআনের উপর আশির অধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর রচনাবলি ইংরেজি, তুর্কি, ফরাসি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় অনূদিত হয়ে পৃথিবীর জ্ঞানগবেষকদের হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। আল্লাহ তাঁকে দীর্ঘ, নিরাপদ ও সুস্থ জীবন দান করুন। আমিন। —সালমান মোহাম্মদ লেখক, অনুবাদক ও সম্পাদক ২৪ মার্চ ২০২০