“বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও ইন্দিরা গান্ধী" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ বিশ শতকের একটি প্রধান জাতীয়তাবাদী স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ । অভ্যন্তরীণ গতিধর্মের (Internal Dynamics) কারণে এটি জনযুদ্ধে রূপ নিয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আলােকসঞ্চারী ঘটনা হিসেবে আবির্ভূত হয় । বাংলাদেশের মানুষের এই বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে সবার পাশে সাহায্য ও সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেন। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। ইতিহাসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে ইন্দিরার ভূমিকা তাই জ্যোতির্ময় হয়ে উঠেছিল। কেন এবং কীভাবে ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে শর্তহীন। সমর্থন জানিয়েছেন? ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ প্রশ্নে ভূ-রাজনীতি, জাতীয় স্বার্থ ও মানবিক বিবেচনা এসব জটিল প্রশ্নের সমীকরণের মুখে ইন্দিরা গান্ধীর অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস কী ছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর বর্তমান গ্রন্থে অনুসন্ধান করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে দক্ষিণ এশিয়ায় যে মােড় পরিবর্তনকারী ঘটনাবলী সংঘটিত হয় তার মূলে ছিল বাংলাদেশের মুক্তিসেনাদের অকাতরে জীবন বিসর্জন। আর যুগল সংগ্রামের দুই নেতা বাংলাদেশের মুজিব এবং ভারতের ইন্দিরা জীবন। উৎসর্গকারীদের অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন। ইতিহাসের বিষয় ফিরে আসে হয়তাে কিছুটা ভিন্নভাবে। যেমন ১৯৭১ সালে ইন্দিরা গান্ধী বাঙালি শরণার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তার বিবরণ এই গ্রন্থে রয়েছে। ফলে বাংলাদেশে বর্তমানে রােহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি বুঝতে এই গ্রন্থ সাহায্য করবে।
আশফাক হােসেন জন্ম ৩১ ডিসেম্বর ১৯৬৯, মৌলভীবাজার শহরে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশােনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমফিল পর্যায়ে গবেষণার বিষয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ । লন্ডনের ব্রিটিশ লাইব্রেরি ও স্কটল্যান্ডের জেমস্ ফিলে আর্কাইভসে সংরক্ষিত মূল দলিলপত্রের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যের নটিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ঔপনিবেশিক বিশ্বায়ন বিষয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। ২০০৭ সালে যুক্তরাজ্যের সিসিপি প্রেস থেকে প্রকাশিত স্টাডিজ ইন পােস্ট কালচার কনফ্লিক্ট জার্নালে তাঁর প্রবন্ধ মুদ্রিত হয়েছে। গবেষণার জন্য ইউজিসির রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক’ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত বিচারপতি ইব্রাহীম স্বর্ণপদক’ পেয়েছেন। প্রকাশিত গ্রন্থ আটটি, গবেষণা প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. হােসেন বর্তমানে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ (ডেপুটেশন)।