"দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: প্রকৃতি ও সমাজ সতত পরিবর্তনশীল। জগতের সবকিছু বস্তুজাত। বস্তুগত ও ভাবগত ছাড়া পৃথিবীতে কিছুই নেই। উন্নতস্তরে সাজানাে বস্তু থেকে চেতনার উদ্ভব। বস্তু ও চেতনার মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। বস্তুই মুখ্য, চেতনা গৌণ। জগৎ অজ্ঞেয় নয়, সবকিছু জানা সম্ভব। প্রকৃতি ও সমাজকে জানতে হলে এর পরিবর্তনের নিয়মকে জানতে হবে অর্থাৎ কেনাে পরিবর্তন হয়, কীভাবে পরিবর্তন হয়, কোন ধারায় পরিবর্তন হয় জানতে হবে। প্রত্যেক বস্তু ও ঘটনার মধ্যে দুই বিপরীতের ঐক্য ও সংগ্রাম পরিবর্তনের কারণ। পরিবর্তন হয় পরিমাণগত পরিবর্তন থেকে গুণগত পর্যায়ে। পরিবর্তনের ধারা হচ্ছে সরল থেকে জটিলে, নিচ থেকে উপরে এবং ক্রমাগত হতেই থাকে পুরাতনকে সরিয়ে নতুনে। এসবই দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ-এর আলােচ্য বিষয়। এই দর্শন সূত্রবদ্ধ করেছেন মনীষী কার্ল মার্কস ও ফ্রেডরিখ এঙ্গেলস । তাঁদের এই মহৎ কর্মের পেছনে অবদান রেখেছে বিজ্ঞান বিষয়ক আবিষ্কার (১) শক্তির অক্ষয়তা ও রূপান্তরের নিয়ম (২) উদ্ভিদ ও প্রাণীর কোষীয় তত্ত্ব ৩) ডারউইনের বিবর্তনবাদ। এই দর্শনের তত্ত্বগত ভিত্তি হচ্ছে হেগেলের দ্বন্দ্ববাদ ও ফয়েরবাখের বস্তুবাদ। দর্শনে ‘দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ’ হচ্ছে একটি বিপ্লব। এর রয়েছে সব সৃজনশীল বৈশিষ্ট্যসমূহ। বিজ্ঞানভিত্তিক দর্শন দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ’ শােষিতের পক্ষের দর্শন, তাঁদের মুক্তির লড়াইয়ে মূল হাতিয়ার। ব্যক্তিজীবনেও এই দর্শন সমান কার্যকর কারণ জগতে বিচ্ছিন্ন বলতে কিছু নেই, সবই পরস্পর সম্পর্কিত। এই সত্যজ্ঞান অধ্যয়ন অপরিহার্য কারণ আমরা প্রকৃতি ও সমাজকে শুধু ব্যাখ্যা করতে চাই না, চাই কাজের মাধ্যমে পরিবর্তন করতে।
লুৎফর রহমান ১৯৫২ সালের ১ জুন ময়মনসিংহ জেলার অধীন গৌরীপুর উপজেলার পাত্রাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা : মরহুম আব্দুর রহমান তাং, মাতা : হাবিবুন্নাহার খানম। শিক্ষা : স্নাতক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি বীর মুক্তিযােদ্ধা। সমাজের নিরন্তর বিকাশই তার চেতনার মূলে নিহিত। প্রকাশিত বই : ‘আকাশ অবারিত নীলের (কবিতা), স্মৃতির বেদনা এবং শূন্যতার অতল (ছােটগল্প), ধর্ম ও দর্শন’ (প্রবন্ধ), দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ’ (দর্শন), ‘নীল শাড়ি’ ও ‘রােদের আঙ্গিনা’ (গল্প),।।