“রেলওয়েতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকালে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সবচেয়ে বেশি গণহত্যা সংঘঠিত হয়েছিল রেলওয়ে অঙনে। সেসময় রেলওয়েতে কর্মরত প্রায় ৬৮ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সিংহভাগই ছিল দেশভাগকালে ভারত হতে আগত অবাঙালি। মুখ্যত কারিগরি পর্যায়ের চাকুরিগুলােতেই ছিল এদের আধিক্য। অপারেশন সার্চ লাইটের মাধ্যমে দেশজুড়ে গণহত্যা শুরু হলে এই অবাঙালি তথা বিহারিরা পাক হানাদারদের সহযােগী হয়ে ভয়াবহ ভূমিকায় উন্মত্ত হয়েছিল । রেল অঙনের গণহত্যার প্রকৃতিও ছিল অত্যন্ত নির্মম। ঘাতকরা নিরপরাধ বাঙালিদের কয়লার ইঞ্জিনের বয়লারে ও লােহা গলানাের উত্তপ্ত চুল্লিতে জীবন্ত নিক্ষেপ করে যেমন হত্যা করেছিল, তেমনি হত্যা করেছিল ছুরি-চাকু চালিয়ে। টিক্কা খানের দুরাশায় আবিষ্ট হয়ে বাংলাকে বাঙালি শূন্য করার এক অলীক এরাদা নিয়ে তারা হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনে লিপ্ত হয়েছিল। হিটলারের পাশবিকতাকেও হার মানিয়েছিল তাদের এ সমস্ত নির্মমতা। সেসময় রেলওয়ে যােগাযােগ ব্যবস্থা-ই ছিল দেশের স্থল পরিবহনের প্রধান মাধ্যম। সে কারণে হানাদার-বাহিনীর সার্বিক চলাচল ও সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত করার জন্য বীরযােদ্ধাগণ দেশ জুড়ে বিস্তৃত ২৮ শত কিলােমিটারব্যাপী রেললাইন, সেতু, স্টেশন ও ট্রেনসমূহে বীরত্বপূর্ণ অপারেশন চালিয়ে তাদের মােকাবেলা করেছিল । এ গ্রন্থের স্বল্প পরিসরে রেলওয়ে অঙনের গণহত্যা ও বীর মুক্তিযােদ্ধাদের প্রতিরােধ সংগ্রামের উপর আলােকপাত করা হয়েছে। আশা করি গ্রন্থটি মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌবরময় কিছু অনুষঙ্গ ও শহিদদের আত্মত্যাগের নানাবিধ বেদনাহত ঘটনাবলি সম্পর্কে অবহিত হতে বিদগ্ধ পাঠক সমাজের সহায়ক হবে।
জন্ম এবং শৈশব-কৈশোর কেটেছে উত্তরবঙ্গের লালমনিরহাট শহরে। গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলায়। বাবা মরহুম আব্দুল ওয়াদূদ ভূঞা, মা রাজিয়া সুলতানা। পাঁচ ভাই এক বোন। স্ত্রী জেসমীন আরা, তিন কন্যা; তূর্ণা, অরণ্যা এবং পৌষী রাজকন্যাকে নিয়ে জীবনযাপন। বই পড়া ও আড্ডা দেওয়া প্রধান শখ। ছড়া ও কবিতা লেখা মূল প্রতিপাদ্য হলেও পরিবেশ, মুক্তিযুদ্ধ, ভ্রমণ, অনুবাদ এবং শিশুতোষের ক্ষেত্রেও লেখার পরিধি বিস্তৃত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে এমএসএস। বর্তমানে চাকরিতে নিয়োজিত। প্রকাশিত গ্রন্থ : কবিতা : শেষান্তে কিছুই হয় না আর, বদ্বীপের বেদনা, তাই যদি হবে, একটি সুন্দর রাতের জন্মদিন, সূর্যহীন তাপের ছায়ায়, অন্তর্ভাজে লুকোচুরি, কবিতায় কবি ছয়, আবৃত্তির কবিতা। ছড়া : পৌষী যাবে রেলগাড়িতে, প্রথম ছড়ার বই, এক শালিকে দুঃখ বাড়ায়, বউ কথা কও ডাকে পাখি, একটি ছোট ঘুড়ি, মেঘ মাদুরে সূর্য ঘুমায়, বিষ্টি ঝরা মিষ্টি ছড়া, সাদা পাতা লাল কবিতা, ডৎড়হম তামাশা, ছড়া কবিতায় একুশ একাত্তর, ছড়ায় ছড়ায় পরিবেশ, আমার শত ছড়া কবিতা, একুশ ও একাত্তরের ছড়া, রাঙ্গা ঠোঁটে ফোটে ফুল।