"ধর্ম ও দর্শন" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: আজকে আমরা ধর্মকে যেভাবে দেখছি মানবসমাজের সাম্যের আদিপর্বে সেভাবে ছিল না। তখন অজানা অসহায়ত্ব থেকে জন্ম নেয় ভীতির। অজ্ঞতা, ভয় এসবই ধর্মের আদি উপাদান । পরে মানুষের সমাজ স্বার্থের দ্বন্দ্বে বিভক্ত হলে ধর্মীয় বিধানে চলে আসে শাসক ও শােষকগােষ্ঠীর স্বার্থগত উপাদানসমূহ। শুরু হয় শােষণের হাতিয়ার হিসেবে ধর্মের অপব্যবহার যা পৃথিবীময় এখনাে অব্যাহত আছে। শােষণ-ক্ষেত্রে ধর্ম দায়ী নয়- দায়ী হচ্ছে ধর্মকে ব্যবহারকারী শােষকগােষ্ঠী। অসহায় মানুষের অবলম্বন হয় ধর্ম, যদিও মুক্তির বিষয়টি নিহিত অন্যত্র। ধর্মের উৎপত্তির মতাে পরিণতি নির্ধারণের দায়িত্ব ইতিহাসের। অন্যদিকে প্রকৃতি ও সমাজের প্রক্রিয়াসমূহের রহস্য জানার ইচ্ছে থেকে মানুষ জন্ম দেয় দর্শনের। জন্মলগ্ন থেকেই দর্শন দুভাগে বিভক্ত, ভাববাদ ও বস্তুবাদ। এ দুয়ের মধ্যে সংগ্রাম অব্যাহত আছে। ভাববাদ অবৈজ্ঞানিক বিধায় এর মাধ্যমে শােষণের প্রক্রিয়াকে আড়াল করা যায়। সে জন্য এ দর্শন শােষকদের দর্শন। পৃথিবী যে রকম আছে সেরকমই - এ মত দেয় বস্তুবাদ। এ দর্শন বিজ্ঞানসম্মত বিধায় শােষিতের দর্শন, শােষণমুক্তির হাতিয়ার। বস্তুবাদের সর্বশেষ রূপ হচ্ছে ‘দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ’। এসবই ধর্ম ও দর্শন গ্রন্থের মূল আলােচ্য বিষয় ।
লুৎফর রহমান ১৯৫২ সালের ১ জুন ময়মনসিংহ জেলার অধীন গৌরীপুর উপজেলার পাত্রাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা : মরহুম আব্দুর রহমান তাং, মাতা : হাবিবুন্নাহার খানম। শিক্ষা : স্নাতক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি বীর মুক্তিযােদ্ধা। সমাজের নিরন্তর বিকাশই তার চেতনার মূলে নিহিত। প্রকাশিত বই : ‘আকাশ অবারিত নীলের (কবিতা), স্মৃতির বেদনা এবং শূন্যতার অতল (ছােটগল্প), ধর্ম ও দর্শন’ (প্রবন্ধ), দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ’ (দর্শন), ‘নীল শাড়ি’ ও ‘রােদের আঙ্গিনা’ (গল্প),।।