"দ্য বায়োগ্রাফি অব আব্রাহাম লিঙ্কন" বইটি সম্পর্কে কিছু কথা: পুরানাে দিনের কথা। ফোর্ট হ্যারড নামে একটি জায়গার নাম ছিলাে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি এলাকায়। অ্যান ম্যাকগিনটি নামের জনৈক স্ত্রীলােক সেই। ফোর্ট হ্যারডে বাস করতেন। তার স্বামীর সঙ্গেই অ্যান সেখানে বাস করতেন। পরিচিতিও বেশ কিছুটা গড়ে উঠেছিলাে তাদের। এর বিশেষ কিছু কারণ নতুন করে তারা এই এলাকায় এনেছিলেন। রেড ইন্ডিয়ান। বংশােদ্ভূত মানুষ এই এলাকায় অধিকাংশ বাস করতাে। অনেককিছুই সম্পূর্ণ অজানা অজ্ঞাত ছিলাে তাদের কাছে। যেমন শুয়ােরপ্রাণীটি। অ্যান আর তার স্বামীই প্রথম তাদের কাছে পরিচিত করেছিলেন এই শুয়াের প্রাণীটিকে। এছাড়া তারাই হস আমদানির কাজটিও করেন। এমনকি তারা আদিম অধিবাসীদের চরকা দিয়ে সুতাে কাটার পদ্ধতি শেখান। তাদের আমদানিকৃত ছিলাে যন্ত্রটি। অধিবাসীদের এরই সঙ্গে তারা আবার নানা ধরনের খাদ্যবস্তু যেমন হলােদে মাখন বানানাের কৌশলটিও শেখান। একেবারেই তাদের এটা জানা ছিলাে না। এর প্রধান কারণ অজ্ঞানতা আর অশিক্ষাই। এই জায়গার মানুষ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন থাকতাে। শুধু ভেড়া জাতীয় চামড়ার পােশাক তারা পােশাক হিসেবে ব্যবহার করতাে। কারণ তাদের কাছে সুতির পােশাক একেবারেই নতুন জিনিস ছিলাে। সকলকে অ্যান দম্পতি তাজ্জব করে দিয়েছিলেন। ভেড়ার লােমের সঙ্গে চরকায় কাটা সুতাে মিশিয়ে চমৎকার নতুন ধরনের কাপড় বানিয়ে। ম্যাকগিনাটি কাপড় নামে এই কাপড়ের নাম চারদিকে প্রকাশ হলো। ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠলাে ব্যাপারটা। অ্যানের কাছে নতুন ধরনের ওই চমক্কার কাপড় বােনার কাজ রপ্ত করতে বহু এলাকার মানুষ দূর-দূরান্ত থেকে আসতে শুরু করে। এতে অ্যান ম্যাকগিনটির অবস্থাও ফিরে গেল। তবে একটি নতুন জিনিসেরও জন্ম হলাে এতে। নানা রসালাে আলােচনার জায়গা হয়ে উঠেছিলাে অ্যান ম্যাকগিনটির বাসগৃহটি। অপরের কেচ্ছা কাহিনীর ছিলাে এই আলােচনার প্রধান বিষয়। অবৈধ জীবনকাহিনী প্রধানত থাকতাে সেই কেচ্ছাকাহিনীর মধ্যে। কিন্তু তারপর? জানতে বইটি পড়ে ফেলুন........
ডেল ব্রাকেনরিডজ কার্নেগী, এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে ২৪ নভেম্বর, ১৮৮৮ সালে জন্ম নেওয়া এই আমেরিকান লেখক তাঁর আত্ম-উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ পদ্ধতি ও বইয়ের পাতায় আজও বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় এক নাম। সেলফ-ইম্প্রুভমেন্ট, সেলসম্যানশিপ, করপোরেট ট্রেনিং, পাবলিক স্পিকিং, ও ইন্টার পার্সোনাল স্কিল এর মতো দারুণ সব প্রশিক্ষণের উদ্ভাবন ও এসব বিষয়ে লেখা ডেল কার্নেগী এর বই সমূহ আশার আলো দেখিয়েছে অসংখ্য হতাশাচ্ছন্ন মানুষকে। মিসৌরিতে দরিদ্র কৃষক পরিবারে জন্ম নেওয়ার দরূণ বালক বয়স থেকেই কাজ করেছেন ক্ষেতখামারে। এর মাঝেও ওয়ারেন্সবার্গের সেন্ট্রাল মিশৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। কলেজ শেষে জীবিকার তাগিদে বেকন, সাবান এবং লার্ড (শূকরের চর্বি মিশ্রিত করা) তৈরির কাজও করতে হয় আর্মর অ্যান্ড কোম্পানির জন্য। ফার্মের প্রধান হিসেবে অনেক সাফল্য লাভ ও ৫০০ ইউএস ডলার সঞ্চয়ের পর ১৯১১ সালে বহুদিনের লালিত স্বপ্ন অধ্যাপক হওয়ার জন্য বিক্রয় সেবার কাজটি ত্যাগ করেন তিনি। কিছু ব্যর্থতার অভিজ্ঞতা ঝুলিতে নিয়ে যখন ওয়াইএমসিএ- এর ১২৫ নম্বরে বাস করতে শুরু করেন, তখনই পাবলিক স্পিকিং এর ধারণাটি মাথায় খেলা করে কার্নেগীর। সেই সময় মোট লভ্যাংশের ৮০% শতাংশের বিনিময়ে ওয়াইএমসিএ এর পরিচালকের কাছে শিক্ষা প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন। এভাবেই ১৯১২ সাল থেকে কার্নেগী কোর্সের যাত্রা শুরু হয়। পুরো আমেরিকাবাসীর কাছে ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির পথ হয়ে উঠে তার পদ্ধতি। ডেল কার্নেগী এর বই সমগ্র এর মধ্যে ‘হাউ টু উইন ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ইনফ্লুয়েন্স’ বইটিকে তার সেরা অবদান হিসেবে ধরা হয়। প্রথম প্রকাশের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই যার ১৭তম মুদ্রণও প্রকাশ করতে হয়েছিলো। ডেল কার্নেগী এর লেখাগুলো বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। ‘বিক্রয় ও জনসংযোগ প্রতিনিধি হবেন কীভাবে’, ‘বন্ধুত্ব ও সম্পদ লাভের কৌশল’, ‘বড় যদি হতে চাও’, ‘ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও সাফল্যের সহজ পথ’ এমন নানা নামের অনূদিত ডেল কার্নেগী বাংলা বই অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে বাংলাভাষী পাঠকদেরও। ডেল কার্নেগী শ্রেষ্ঠ রচনাসমগ্র এর মধ্যে আরও আছে ‘দ্য বায়োগ্রাফি অব আব্রাহাম লিংকন’, ‘ফাইভ মিনিট বায়োগ্রাফিস’ এবং ‘বিশ্বায়নের পটভূমি’। ১ নভেম্বর, ১৯৫৫ সালে আমেরিকান এই অধ্যাপক মৃত্যুবরণ করেন।