"উপন্যাসের শিল্পরূপ" বইটির প্রথম অংশের লেখাঃ উপন্যাসের শিল্পরূপ’ তাঁর সাহিত্যতত্ত্ব বিষয়ক প্রবন্ধ গ্রন্থ। এতে উপন্যাস সাহিত্যের শিল্পগত দিক সম্পর্কে তিনি মূল্যবান আলােচনা করেছেন। বইখানার মূল ভিত্তি ক্রিস্টফার কডওয়েলের ‘মায়া ও বাস্তব’ (Illusion and Reality) এবং রালফ ফস্-এর উপন্যাস এবং জনসাধারণ’ (The Novel and the People)। ‘উপন্যাসের শিল্পরূপ’ গ্রন্থখানা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৫৯ সালে। বর্তমানে বইটি বাজারে দুষ্প্রাপ্য। বাংলা সাহিত্যের ছাত্র শিক্ষক গবেষকগণের জন্য অত্যন্ত প্রয়ােজন বিধায় বইটি পুনঃপ্রকাশ করা হল। বর্তমান সময়ের পাঠকের কথা চিন্তাকরে বইটির বানানরীতি প্রমিত করা হয়েছে। প্রগল্ভতার জন্য মার্জনা ভিক্ষা করে আর একটা কথাও এখানে বলে রাখছি। উপন্যাসের শিল্পরূপ প্রবালদ্বীপের মতােই সৃষ্ট; অর্থাৎ খ্যাত ও অখ্যাত, দেশ ও দেশান্তরের, অতীত ও বর্তমানের অগণিত উপন্যাসশিল্পীর বিচিত্র সৃষ্টিসাধনায় এর মর্মভূমি রচিত। সুতরাং এ বিষয়ের ব্যাখ্যায় সাধারণত ইতিহাসের ধারা সামগ্রিকভাবে প্রতিফলিত হতে বাধ্য। কিন্তু উপস্থিত গ্রন্থে উপন্যাসের শিল্পরূপের সঙ্কটের মূল প্রশ্নটিকেই সর্বদা সামনে রাখা হয়েছে। ইতিহাসের ধারাকে খণ্ডখণ্ডভাবে মূল প্রশ্নের চারদিকে বিশ্লেষণের প্রয়ােজনবােধে উপস্থিত করা হয়েছে। এজন্য পাঠক-পাঠিকারা তাঁদের প্রত্যেকের প্রিয় একাধিক উপন্যাস-শিল্পীর নাম পাবেন না আমার বইটিতে। আমি নিজেও অনেক প্রিয়-শিল্পীর নাম করতে পারিনি, প্রবল ইচ্ছা সত্ত্বেও।
রণেশ দাশগুপ্ত জন্ম ১৯১২ সালের ১৫ জানুয়ারি ভারতের ' আসামে। পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ। ভারতের বাঁকুড়া জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক ও কলকাতার সিটি কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। ব্রজমােহন কলেজে অধ্যয়নকালে কমিউনিস্ট রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৩৮ সালে গড়ে তােলেন প্রগতি লেখক সংঘ ঢাকা পৌরসভার নির্বাচনে ' রণেশ দাশগুপ্ত কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে বামপন্থী রাজনীতির কারণে প্রায় নয় বছর জেলে কাটান। দৈনিক সংবাহ দেশের প্রগতিশীল পত্রপত্রিকায় কাজ করেছেন। ১৯৭৫-এ কলকাতায় গিয়ে আর ফেরেননি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত সাহিত্যচর্চা করেছেন। উল্লেখযােগ্য বই উপন্যাসের শিল্পরূপ, শিল্পীর স্বাধীনতার প্রশ্নে আয়ত দৃষ্টিতে আয়ত রূপ, আলাে দিয়ে আলাে জ্বালা, রহমানের মা ও অন্যান্য। অনুবাদ : ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের কবিতা। মৃত্যু ৪ নভেম্বর '১৯৯৭, কলকাতায়। ১৯৯৮ সালে তাকে মরণােত্তর একুশে পদক দেওয়া হয়।