বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা ‘মন’, ‘সুখপাখি আগুনডানা’, ‘না’, ও ‘চন্দন রােশনি'—এ চার উপন্যাস একত্রিত করে ‘মােহিত কামালের উপন্যাসসমগ্র প্রথম খণ্ড’-এর নামকরণ করা হয়েছে ‘মনভুবন।
মন : মনস্তত্ত্বের কলকবজায় বাঁধা মনের সাহিত্য। মােবাইল ফোনে ভর করে শব্দতরঙ্গ হানা দেয় নারী-পুরুষের শয়নকক্ষে আলােড়িত হয় মন। পরকীয়া প্রবেশ করে পরিবারে। বাবা-মায়ের স্খলন সন্তানকে মাদকাসক্তির অন্ধকারে ঠেলে দেয়। যৌক্তিক জীবনজিজ্ঞাসার আলােকে পাঠকের চোখে এ উপন্যাসে মূর্ত হয়: মাতৃত্বই সমুজ্জ্বল বাতিঘর।
সুখপাখি আগুনডানা : কেন্দ্রীয় চরিত্র ছাত্রী নাদিয়া ও শিক্ষক জিয়াউল হক। বিবেকবােধের আলােয় উত্তীর্ণ হয়েছেন শিক্ষক—জয় হয়েছে পিতৃত্বের। সর্বনাশের প্রান্তে দাঁড়িয়েও এখানে চরিত্রদের মধ্যে উন্মেষ ঘটে নৈতিকতার। পাঠক পেয়ে যায় : মানবমনের অন্তর্নিহিত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার শিল্পিত স্বরূপ।
না: তেজস্বিনী তরুণী রুবা। নেতিবাচক চিন্তার ঝঞাকে ইতিবাচক মূল্যায়নের মাধ্যমে পথ রচনা করাই তার স্বভাব। এ উপন্যাসের মূল স্রোতােধারায় রয়েছে ‘না’ বলার সুফল, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিজেকে সমুখে এগিয়ে নেওয়ার জয়গান। একদিকে বন্ধুত্বের মহত্ত্ব, অপরদিকে অবাঞ্ছিত আমন্ত্রণ এখানে, শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ির ঐতিহাসিক ও বর্তমান ঘটনার অন্তর্গত চেতনা থেকে উঠে আসে রবীন্দ্রপ্রেম।
চন্দন রােশনি : মহাসাগরের অতলে হানিমুন করছে অর্ণব। সমুদ্রের অথই জলে হানিমুন—এমন কাহিনি বাংলা সাহিত্যে সম্ভবত প্রথম। সমুদ্রসৈকতে অপেক্ষমাণ উর্বশী, নববধূ। সাগরতলের অর্ণব আর উর্বশীর কীভাবে সংযােগ ঘটে? সচেতন ও অবচেতন মনের একক সমগ্রতায় কল্পনা ও সুররিয়ালিজমের এক অবিনাশী শিল্পরূপ।
তিনি একদিকে কথাসাহিত্যিক, অন্যদিকে মনোশিক্ষাবিদ। ২০১৮ সালে কথাসাহিত্যে পেয়েছেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার। জাপানের ১২তম ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব সাইকিয়াট্রির ফেলোশিপ প্রোগ্রামে নির্বাচিত হন বিশ্বের প্রথম সেরা ফেলো। জন্ম ১৯৬০ সালের ২ জানুয়ারি সাগরকন্যা সন্দ্বীপে। এমবিবিএস করেছেন সিলেট এম.এ.জি. ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে। তিনি সাহিত্য-সংস্কৃতির মাসিক ’শব্দঘর’র সম্পাদক এবং জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট (এনআইএমএইচ)-এর একাডেমিক পরিচালক। ২০১২ সালে তাঁর মনস্তত্ত্ব বিষয়ক গ্রন্থ ‘মানব মনের উদ্বেগ ও বিষন্নতা’ কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্য করা হয়।