বলা হয়, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিনির্মাণে বা রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক আবহ শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে টেলিভিশনের টকশােগুলাে বড় ভূমিকা রাখে। বিশেষ করে যখন রাজপথে, সংসদে বা অন্য কোথাও বিরােধী দলগুলাে সরকারের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনাে আন্দোলন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয় তখন টেলিভিশনের টকশােতে এসে দলের নেতারা সরকারের সমালােচনায় মুখর হয়ে ওঠেন। ফলে অনেক সময় টেলিভিশনের এই টকশােকে ‘বিকল্প পার্লামেন্ট’ বলেও অভিহিত করা হয়। আর এ কারণে কোনাে কোনাে টকশাে, টকশাের আলােচক ও সঞ্চালক ক্ষমতাসীনদের বিরাগভাজনও হয়ে থাকেন। তবে টেলিভিশনের ভেতরে যারা কাজ করেন, যারা টকশাের অতিথি নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত তারা জানেন যিনি কম জানেন, তিনি ভালাে বলেন; যিনি বেশি জানেন তিনি কম বলেন এবং টকশােতে কম আসেন বা আসতে পারেন। আবার কোনাে কোনাে উপস্থাপক তাদের অনুষ্ঠানের আলােচকদের ওপর এতটাই নিয়ন্ত্রণ বা প্রভাব বিস্তার করে রাখেন যাতে অনেক সময় দর্শক বিভ্রান্ত হয় যে, আসলে কে আনােচক এবং কে সঞ্চালক? কোনাে কোনাে সঞ্চালক আলােচনায় কোন বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত করবেন তা আগেই ঠিক করে রাখেন। ফলে আলােচকরা যাই বলুন না কেন তিনি গল্পের গরু গাছে তুলতে প্রাণপণ সচেষ্ট থাকেন। কোনাে কোনাে টেলিভিশন সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্যে পরিচালিত হয় এবং তাদের বিরুদ্ধমতের কোনাে বিষয়ে আলােচনার সূত্রপাত করলে সেখানে ওই বিরুদ্ধমতের কথিত অনুসারী আলােচকদের যে। ভাষায় এবং যে ভঙ্গিতে প্রশ্ন করা হয়, তাতে প্রশ্ন ছাপিয়ে সেটি একধরনের ‘জেরা’য় পরিণত হয়। তখন এটি টেলিভিশনের সেট নাকি আদালতের কাঠগড়া, তা ঠিক বােঝা যায় না।