"সংবিধানের রাজনৈতিক বিতর্ক" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: একটি কার্যকর ও গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন এবং সেই সংবিধানের আলােকে দেশ চলছে কি না, তার উপর নির্ভর করে ওই রাষ্ট্রের চরিত্র। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার যে ঘােষণাপত্র জারি করা হয়। এবং যেটি ছিল বাংলাদেশের অস্থায়ী সংবিধান, সেখানে জনগণের সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করার অঙ্গীকার ছিল। কিন্তু স্বাধীনতার প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরেও একটি মানবিক মর্যাদাপূর্ণ সমাজ গঠন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার বা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে কি না, জনমনে সে প্রশ্ন রয়েছে। আবার বিভিন্ন সময়ে সরকারসমূহ তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানে যেসব সংশােধনী এনেছে, সেখানে বৃহত্তর জনস্বার্থ কতটুকু রক্ষিত হয়েছে, সে প্রশ্নও এড়িয়ে যাওয়ার সুযােগ নেই। অন্যদিকে সংবিধানের বিবিধ বিষয় নিয়ে মাঝেমধ্যেই এমন সব রাজনৈতিক তর্ক উত্থাপিত হয় যা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলাের মধ্যে বিভেদ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আইন ও বিচার বিভাগ মুখােমুখি দাঁড়ায়। সংবিধান জনগণকে সকল ক্ষমতার মালিক ঘােষণা করলেও সেই ক্ষমতার প্রয়ােগে এমন সব শর্ত রাখা হয়েছে, যাতে আখেরে নির্ধারিত সময় পরপর ভােট দেয়া ছাড়া রাষ্ট্রক্ষমতায় জনগণের মালিকানা নিশ্চিত হয় না । বরং এই মালিকানার বিষয়টি একধরনের ধোঁয়াশা। বা ক্যামােফ্লাজ তৈরি করে। এসব বিতর্কের নির্মোহ বিশ্লেষণই এই বইয়ের উদ্দেশ্য।