‘৭ শিহরণ’ সাতটি প্রাপ্তবয়স্ক থ্রিলার উপন্যাসিকার সংকলন, যেগুলো হানা দিয়েছে মানবমনের অন্ধকার অলিগলিতে, ছানবিন করে তুলে এনেছে বিচিত্র সব বিকৃতিকে। প্রতিটি নভেলাতেই রয়েছে অপরাধী, কিন্তু তারা কেউই তথাকথিত দাগী আসামী নয়। বরং, আশপাশের সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মনের অবচেতনে লুকিয়ে থাকা ক্লেদেরই খোঁজ করা হয়েছে গোটা সংকলনে। কোনো নভেলায় আদিম অরণ্যের কোন বিলুপ্তপ্রায় উপজাতির হাড় হিম করা প্রথা উঠে এসেছে, কোনোটায় উন্মোচিত হয়েছে অদ্ভুত কোন অসুখ, যার কবলে পড়ে মানুষ হয়ে উঠেছে ষড়রিপুকে অতিক্রম করে যাওয়া অপার্থিব কোন জীবস্বরূপ। সভ্য কারা, অসভ্যই বা কারা? সভ্যতার মাপকাঠি কি? সামাজিক কিছু প্রথার প্রভাব ও সভ্য-অসভ্যজগতের সীমারেখা লীন হয়ে গেছে এই সংকলনের উপন্যাসিকাগুলোতে। এতে যেমন রয়েছে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ইতিমধ্যেই পাঠকমহলে বহুলআলোচিত ‘মর্গের নেকড়ে ইঁদুর’, ‘গহন গভীরে’ এর মত কয়েকটি এডাল্ট উপন্যাসিকা, তেমনই রয়েছে SC ST Reservation নিয়ে সংবেদনশীল বিষয়ের ওপর সম্পূর্ণ অপ্রকাশিত উপন্যাস মৌনমুখর। মৌনমুখরের একটি টিজার কিছুদিন আগে লিখেছিলাম তাতে বিতর্ক হয়েছিল যথেষ্ট, শিক্ষা ও চাকরীক্ষেত্রে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা, প্রভাব সম্পর্কে লেখা আমার এই মনস্তাত্ত্বিক থ্রিলার আশা করি পাঠকমহলে ছাপ ফেলবে, পাঠককে ভাবাবে। সাতটি উপন্যাসিকাই কঠোরভাবে ১৮ , তাই আশা করব, পাঠকবন্ধুরা বিভ্রান্ত হবেন না। এতে রয়েছে - • মৌনমুখর • ভোজ • গহন গভীরে • লকার নম্বর তেত্রিশ • মীরার প্রেম • নেদারল্যান্ডের চারপেয়েটা • মর্গের নেকড়ে ইঁদুর
এই ২৭ বছর বয়সেই তিনি বর্তমান বাংলা সাহিত্যের অন্যতম জনপ্রিয় সাহিত্যিক। এর মধ্যেই পুরস্কৃত হয়েছেন বাংলাদেশ, রাজ্য সরকারের তরফে। পেয়েছেন ‘বুক ফার্ম সেরা সাহিত্য সম্মান ২০১৮, Literary Star of Bengal Award, ২০১৮। দেবারতি মুখোপাধ্যায় আদতে ডানকুনির মেয়ে। সরকারী কলেজ থেকে পাশ করেন ইঞ্জিনিয়ারিং, তারপর ফিন্যান্সে MBA। প্রথমে কিছুদিন আমেরিকান আইটি কোম্পানিতে চাকরি করেন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। তারপর একে একে পেয়েছেন দশের কাছাকাছি সরকারী চাকরি। চারবছর রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ছিলেন। সম্প্রতি রাজ্য সরকারে জয়েন করেছেন WBCS Officer হিসেবে। ২০১৬ সালের শেষদিকে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘ঈশ্বর যখন বন্দী’। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তা বাংলা সাহিত্যে সৃষ্টি করে আলোড়ন। একবছরের মাথায় শেষ হয় চারটি মুদ্রণ। রাজ্য সরকারের তরফে মালদা জেলাপরিষদ তাঁর ‘বাবা’ গল্পটিকে ‘বছরের সেরা ছোটগল্প ২০১৬’ সম্মাননায় ভূষিত করে। এরপর প্রকাশিত হয় একে একে উপন্যাস ‘নরক সংকেত’, গল্প সংকলন ‘ঝিঁঝিঁ পোকার মালা’, গল্প সংকলন ’১৫ ফোঁটা বৃষ্টিতে।’ প্রতিটিই সাদরে গৃহীত হয় পাঠকমহলে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বৈজ্ঞানিক থ্রিলার উপন্যাস ‘নরক সংকেত’ প্রকাশের মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় ৫০০০ কপি নিঃশেষিত হয়ে জিতে নেয় ‘২০১৭ এর সর্বাধিক বিক্রিত থ্রিলার’ এর তকমা। একে একে প্রকাশিত হয় ‘থ্রি’, ‘প্রহেলিকা’র মত আরো কিছু সংকলন। দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের লেখার বৈশিষ্ট্য হল অভিনব প্লটের সঙ্গে পড়াশুনোসমৃদ্ধ টানটান লেখনী, যা নজর কেড়েছে বাংলা সাহিত্যমহলের, সমালোচকবৃন্দের। বাংলা বাজারের এই মন্দার সময়েও তাঁর পাঠকসংখ্যা রীতিমত ঈর্ষণীয়। অতিনব্য যুগের যে তরুণী সারাদিন মগ্ন মোবাইলে, তিনিই বইমেলায় ছোটেন দেবারতির বই কিনতে। এমনই ঝকঝকে মুগ্ধতা তাঁর লেখায়। রাজ্যসরকারী গুরুত্বপূর্ণ আমলার পদ সামলে তিনি সমান্তরালে লিখে চলেছেন নবকল্লোল, শুকতারার মত পত্রিকাতেও। তাঁর আসন্ন উপন্যাস ‘অঘোরে ঘুমিয়ে শিব’ এর ট্রেলার ইতিমধ্যেই দেখেছেন প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। ফেসবুকে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা লক্ষ ছুঁইছুঁই। সেখানেও তিনি নিয়মিত লেখেন তথ্যসমৃদ্ধ থ্রিলার, অদ্ভুত সমস্ত সিরিজ। তাঁর ছোটগল্প নিয়ে তৈরি হচ্ছে চলচ্চিত্রও।