সমকালীন বাংলা কবিতার সবচেয়ে গহীন ও নির্জন কাব্যসাধুর নাম কবি নূরুল হক। কবিতায় জীবনকেই প্রধান করে দেখেন তিনি। যাপিত জীবনের আঘাত, অর্জন ও প্রজ্ঞানগুলোই ছড়িয়ে পড়ে কবির রক্তদানায়। সময় এবং সমাজ থেকে কবি কোন ভাবেই ফসকে যেতে পারেন না। হোক রাজনৈতিক, হোক অরাজনৈতিক প্রত্যেকটা বিষয়কেই ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে কবিতায় নামাতে হয়। নূরুল হকের কবিতা তাই সময় ও যাপিত জীবনের অভিজ্ঞান। একটা পরম দরদী ভাষায় জীবনের সৌন্দর্য ও অতলতাকেই স্পর্শ করেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথের মতে কবি দুই ধরনের; বিশ্বজগতের কবি এবং সাহিত্যজগতের কবি। বিশ^জগতের কবিরা জগতের মূল প্রস্রবণ থেকে কবিতার সার বস্তু তুলে আনেন। আর সাহিত্যজগতের কবিরা কেবল রচনার কলাকৌশল ও আঙ্গিকের সমৃদ্ধি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। ভাষা ও শব্দ সুষমা, সাহিত্যতত্ত্বেই এঁদের মন ও প্রকৃতি। অন্যদিকে নূরুল হকের মতো বিশ^জগতের কবিরা রক্তদানায় প্রবাহিত কথাকেই লিখতে থাকেন। শুধু কবিত্বের বিকিরণে তিনি সীমায়িত নন; বলার সহজতায় এবং অভিজ্ঞতার অপূর্বতায় তাঁর কবিতা জীবনের ছায়াতল। আসুন পাঠক বাংলা কবিতার এই নির্জন কাব্যসাধুকে জানি। ঘুরে ঘুরে দেখি তাঁর কবিতাশ্রম।