“ঝন্সীর রানী” বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবে বিভিন্ন রাজ্যের রাজাদের বিদ্রোহকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসার পেছনে ‘ডক্ট্রিন অব ল্যান্স’ এর ভূমিকা ছিল। লক্ষীবাঈ এর বিরুদ্ধে আপিল করলেন, ফল হলাে না। তাকে পেনশন ও প্রাসাদে থাকতে দেওয়ার বিনিময়ে ঝাঁসির প্রতি কোম্পানির অধিকার বহাল রাখলাে। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের দাবানল ছুঁয়ে গিয়েছিল ঝাঁসিকেও। সেখানকার বিদ্রোহীরা ৬০ জনের মতাে ইংরেজকে হত্যা করে। রানী তখন তার প্রাসাদে। ক্ষমতাহীন লক্ষীবাঈ, যতদূর প্রমাণ পাওয়া যায়, এই হত্যার সাথে কোনােভাবেই জড়িত ছিলেন না। ইংরেজ সরকার নড়েচড়ে বসল। সিপাহী বিদ্রোহকে শক্ত হাতে দমনের সাথেই ঝাঁসির বিদ্রোহীদের কঠোর সাজা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। শাসনকর্তা প্রভুর পায়ের নিচ থেকে তার জাতভাইকে মেরে ফেলবে, এমন সাহস যেন আর কোনো ভারতীয়ের না হয় এমন উদ্যোগ নেওয়া হতে থাকলাে। ১৮৫৮ সালে জেনারেল হিউজ রস তার সৈন্য-সামন্ত নিয়ে ঝাঁসি পৌছালেন। তাদের যুদ্ধ রানীর বিরুদ্ধে ছিল কি না, অথবা রানী চুপচাপ ঘরে বসে থাকলেও তার সাথে ইংরেজদের বিরােধ বাঁধতাে কি না, তার প্রাণসংশয় হতাে কি না, তা বলা মুশকিল। তবে রানী বসে থাকেননি। তিনি নিজেই ঝুঁকি নিলেন। বললেন, “আমি আমার ঝাঁসি কাউকে দেব না” বলা হয়ে থাকে, রানী বেঁচে গিয়েছিলেন ইংরেজদের সতীদাহ বিলােপ নীতির কারণেই, কিন্তু একসময়ে এসে সেই ইংরেজদের বিরুদ্ধেই অস্ত্র তােলেন। কিন্তু বাস্তবতা হলাে, সেই সময়ে সতীদাহ বিলােপ আইন করে হলেও ভারতীয় সমাজ তা মেনে নেয়নি। চাইলেই লক্ষীবাঈকে চিতায় উঠিয়ে দেওয়া যেতাে।