ফ্ল্যাপে দেওয়া আছে কে এই ইন্দ্রনাথ রুদ্র ? সে এমনই এক শখের গােয়েন্দা যার প্রিয় বসন দামি পাঞ্জাবি আর চুনােট করা ধুতি—ফুল-কেঁচা গোঁজা থাকে পাঞ্জাবির পকেটে। সে ভালবাসে। ল্যাভেন্ডাব-সুবাস। তার দুই চোখে কমল-হিরের ঝিকিমিকি। সে অপূর্বকান্তি সুদর্শন পুরুষ, দীর্ঘকায়, গৌরবরণ, নাক-মুখ-চোখ-চিবুক যেন ইটালিয়ান মার্বেল কেটে গড়া। সে অনায়াসেই মেগাস্টার হতে পারত অথবা নামী আইনবিদ—অথবা দেশপ্রিয় রাজনীতিবিদ—কিন্তু সে তা হয়নি। চেহারায় সে কবি-কবি, সরু গোঁফে নিপুণ সূক্ষ্মতা—নবনীতকোমল আপাতদৃষ্টিতে – কিন্তু বজ্রকঠিন লৌহমুষল দ্বৈরথ সমরের সময়ে; তখন সে মূর্তিমান বিভীষিকা, চলমান বিদ্যুৎ, নরাকারে চিতা, শরীরী অশরীরী, অসাধারণ লক্ষ্যভেদী। সে অপরাধ-জগতের আতঙ্ক, অসহায় মানুষের পরম সুহৃদ। সে একা, বড় একা। যৌবনে স্কটিশ চার্চ কলেজে এক প্রণয় বিভ্রাটের পরিণামে এখন সে এক জীবন্ত ম্যাগনেট সুন্দরী মহলে—কিন্তু প্রেমের ফাঁদ সে পাতে শুধু কুহকিনী দুষ্কৃতিদের টেনে তােলার জন্যে—নিজে থাকে সমস্ত আবেগধরাছোঁয়ার বাইরে। সে নিত্য যােগব্যায়াম চর্চা করে, অবসর সময়ে বইয়ের পাতায় ডুবে থাকে—হা, সে একা ... বড় একা। তার নাম ইন্দ্রনাথ রুদ্র-প্রাইভেট ডিটেকটিভ।
জন্ম ১ ডিসেম্বর, ১৯৩২, কলকাতায়। একটি শিক্ষক-পরিবারে। ছােট থেকেই অজানার দিকে দুর্নিবার আকর্ষণ। অ্যাডভেঞ্চারের টান জীবনে, চাকরিতে, ব্যবসায়, সাহিত্যে। চোদ্দোবার চাকরি-বদল। নামী একটি প্রতিষ্ঠানের পারচেজ ম্যানেজার-পদে ইস্তফা দিয়ে পুরােপুরি চলে আসেন লেখার জগতে। গােয়েন্দাকাহিনি দিয়ে লেখালেখির শুরু। ‘রচনারীতির দিক থেকে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরী’— অভিনন্দন। জানিয়েছে একটি নামী সাপ্তাহিক। সেরা বিদেশি গােয়েন্দাকাহিনিকে পরিবেশন করেন বাংলায়। বিজ্ঞান, কল্পবিজ্ঞান, অতীন্দ্রিয় জগৎ, অতিপ্রাকৃত, অনুবাদ- প্রায় সব ক্ষেত্রেই পেয়েছেন স্বীকৃতি। ভারতের প্রথম কল্পবিজ্ঞান পত্রিকা ‘আশ্চর্য’র ছদ্মনামী সম্পাদক। এ ছাড়া সম্পাদনা করেন ফ্যানটাসটিক’। পত্রিকা, রেডিয়াে, ফিল্মক্লাবের মাধ্যমে কল্পবিজ্ঞানকে আন্দোলন-আকারে সংগঠিত করেন। একাধিক পুরস্কার। কিশাের জ্ঞানবিজ্ঞান ও পরপর দু’বছর দক্ষিণীবার্তা’র শ্রেষ্ঠগল্প পুরস্কার। অনুবাদের ক্ষেত্রে ‘সুধীন্দ্রনাথ রাহা’-পুরস্কার। ভালবাসেন: বই। গানবাজনা। দেশভ্রমণ।