মেহেরপুর-কুষ্টিয়া-মুর্শিদাবাদের নিকটবর্তী। মুর্শিদাবাদে অস্ত গিয়েছিল বাংলার স্বাধীনতার সূর্য। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলা প্রকৃত অর্থে রক্তে-মাংসে বাঙালি না হলেও বাংলার আনাচে-কানাচে ঘুরে ঘুরে বাংলার শত্র“ বর্গীদের বিরুদ্ধে মাঠে প্রান্তরে যুদ্ধ করে মননে, মগজে, চিন্তা-চেতনায় বাংলা প্রেমিক বাঙালিতে পরিণত হয়েছিলেন। তিনি নানার মৃত্যুর পর বুদ্ধিমত্তা-সাহস ও দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলার মস্নদে আরোহণ করেন। খালা ঘষেটি বেগম, খালু মীরজাফর আলী খাঁর ক্ষমতার মোহ, ফতেহ আলী চাঁদ (জগৎশেঠ), রাজা রায়দুর্লভ, উমিচাঁদদের অর্থ লোভÑএ সব কিছুর সমন্বিত ষড়যন্ত্রের ফলে ইংরেজদের সহযোগিতার ফলে ১৭৫৭ সালে পলাশীর আম্রকাননে পরাজিত সিরাজদ্দৌলা বাঙলার স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখলেও মীরজাফর পুত্র মিরনের হাতে হত্যার শিকার হওয়ায় বাঙলার স্বাধীনতার সূর্য পুরোপুরি অস্তমিত হয়। মধুমতি একটি নদী, যে নদী বহমান মুর্শিদাবাদ-এর নিকটবর্তী এলাকা থেকে বাংলার ফরিদপুর অঞ্চলের গোপালগঞ্জ পর্যন্ত। এই মধুমতি বাহিত বাইগা নদীর জলাস্রোত দ্বারাই বিধৌত টুংগীপাড়া গ্রাম। মনে হয় পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত বাংলার স্বাধীনতা লজ্জায় মধুমতির স্রোত বেয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিল, লুকিয়েছিল টুংগীপাড়ায়। নইলে এই টুংগী পাড়াতেই কেন জন্ম নেবে বাংলার স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের সূর্য সন্তান। সে এক ডানপিটে দুরন্ত, দুষ্ট, সাহসী, তেজী-ও একরোখা একটি বালক, একটি কিশোর, একজন তরুণ, একজন যুবক, একজন পিতা একজন সংগ্রামী নেতা যে ধারাবাহিকভাবে জাতির পিতায় পরিণত হয়েছে। বিশ্ববাসী আমাদের দেশ ও জাতিকে চিনেছে তাঁরই নামে, তার দেশ বলে। আর যে সূর্য সন্তানের কথা বলবো সে হল আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।