ফুল-পাখির অপূর্ব সমন্বয়ে যিনি রচনা করেছেন এক মহাকাব্য তিনি জীবনানন্দ দাশ ছাড়া কে হতে পারেন! প্রতিটি শব্দ-কল্প-চিত্রের ভেতর অনায়াসে গেঁথে থাকা ফুল ও পাখিরা আমাদের হৃদয়ের কতটা অন্তরঙ্গ জীবনানন্দের কাব্যচিত্রমালায় তা গভীরভাবে অনুভব করা যায়। বাংলাকাব্যে অনুমপ শব্দে সর্বাধিক পাখির এমন মায়াবী উপস্থিতির একমাত্র কারুকার জীবনানন্দই। জীবনানন্দের সকল পাখি নিয়ে এটিই প্রথম কোনো গ্রন্থ যা উদ্ভিদ ও পাখি গবেষক সৌরভ মাহমুদ রচনা করলেন। সৌরভ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে প্রকৃতি নিয়ে লিখছেন। বিশেষত উদ্ভিদ ও পাখি নিয়ে তার আলাদা রকম বাকভঙ্গি রয়েছে। এর পেছনে অঢেল সময়ও ব্যয় করেন। ফুল-পাখির সন্ধানে মাঠে-ঘাটে ঘুরে বেড়ান। সেগুলো আবার পত্রিকার মাধ্যমে প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে পৌঁছে দেন। জীবনানন্দ দাশ তাঁর সমগ্র রচনায় যেসব পাখির কথা উল্লেখ করেছেন এই গ্রন্থে সেসব পাখিদের এনে জড়ো করেছেন সৌরভ মাহমুদ। পাখিবিষয়ক সবগুলো কবিতাই এই গ্রন্থে পাওয়া যাবে। সঙ্গে মিলবে কিছু বৈজ্ঞানিক তথ্য ও প্রাসঙ্গিক আলোকচিত্র। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা লেখক সৌরভ মাহমুদ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন জীবনানন্দ দাশ কোন্ কাব্যগ্রন্থে ও উপন্যাসে কতটি পাখির কথা বলেছেন। সবকিছু ছাপিয়ে এই গ্রন্থে সবচেয়ে বড়ো স্বস্তির খবর হলো জীবনানন্দ দাশ-এর সব পাখিকে একসাথে দেখতে পাওয়ার আনন্দ।
জন্ম বরিশালের শায়েস্তাবাদের হবিনগর গ্রামে তাঁর মায়ের বাড়িতে। শৈশব ও কৈশর কেটেছে হবিনগর গ্রাম, বরিশাল শহর ও ঢাকা শহরে। তিনি প্রকৃতিবিষয়ক প্রবন্ধ লিখেন এবং নিবিষ্ট প্রকৃতি গবেষক। কবি জীবনানন্দ দাশের নিসর্গ তাঁর গবষেণার অন্যতম বিষয়। দুই দশকের বেশি সময় ধরে প্রকৃতি বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন দৈনিক 'প্রথম আলো' কাগজের প্রকৃতি কলামে। তাঁর রচিত গ্রন্থগুলো হলো-'জীবনানন্দের পাখিরা', মায়ের ঘ্রাণমাখা নদী', 'শ্যামলী রমনা' 'বাংলার ও জীবনানন্দের শালিকেরা' এবং 'পাখি আমার বনের পাখি'।