"যুদ্ধদিনের কথা" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ ‘যুদ্ধদিনের কথা লেখকের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন গ্রন্থ ও পত্র-পত্রিকা এমন কি ফেসবুক থেকে আহরিত কাহিনি এবং ছবি এই গ্রন্থে পরিবেশিত হয়েছে। আজকে বাংলাদেশ পঞ্চাশ বছরে পা দিয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করােনার অশুভ থাবা বিস্তৃত না হলে এই বছরটি উৎসব মুখরিত হতাে। এ বছরই আবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ পূর্তি হচ্ছে। এ কারণে ২০২১ বাঙালিদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। আমরা এই পঞ্চাশ বছরে নানা বিরূপ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছি। অনেক মুক্তিযােদ্ধাও ১৯৭৫-এ ১৫ আগস্ট পর রাজাকারের সারিতে অবস্থান নিয়েছেন। অনেকে সামরিক স্বৈরশাসকের পদলেহন করেছে। জাতিকে মিথ্যে তথ্য দিয়ে এবং ধর্মরাজ্য প্রতিষ্ঠার কথা বলে বিভ্রান্তও করেছে। ফলে তারা মুক্তিযুদ্ধ বিরােধী অবস্থানে জাতিকে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করেছে। দেশে অনেকেই আছেন যারা মুক্তিযুদ্ধের অনেক কাহিনি ভােলেননি। তাদের স্মৃতিতে অসংখ্য ঘটনা নিরন্তর আনাগােনা করে। সুজিত সরকারের কৈশোর অভিজ্ঞতার আলােকে তার দেখা অনেক বিষয় এখানে গল্পাকারে পরিবেশন করে জাতিকে মনে করিয়ে দিয়েছেন চান একাত্তরের দুর্বহ অভিজ্ঞতার কথা। নাদের গুণ্ডা কিংবা চেঙ্গিস বাহিনির বীরত্ব গাথাও পত্রিকা থেকে সংগ্রহ করে তিনি যুদ্ধদিনের ভয়ঙ্কর সাহসীদের অবদান তুলে ধরেছেন। জাতির অবদান ও ত্যাগের তথ্য পরিবেশন করেছেন। ত্রিশ লক্ষ বাঙালির আত্মদান এবং সাড়ে চার লক্ষ মা-বােনের সম্মান-সমতা বিসর্জন তাে কারাে ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থের জন্য ব্যর্থ হতে দেয়া যায় না। জাতিকে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে গড়ে তােলা অন্যতম কর্ম পরিকল্পনা বলে মনে করেছেন লেখক। না হলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের "সােনার বাংলা” কী করে বাস্তবায়িত হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীন-ভূমিহীনদের আবাসিক ব্যবস্থা এবং অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে দিয়ে জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপে এগিয়ে যাচ্ছেন বলে দেশবাসী মনে করে। কারণ শেখ হাসিনা তাদের পাশে আছেন আন্তরিকতা নিয়ে। জাগিয়েছেন আশার আলাে। বিগত ১২/১৪ বছরে দেশের উন্নয়ন ঘটেছে। গ্রাম পর্যায়ে পাকা রাস্তা, বিদ্যুৎ এবং আধুনিক প্রযুক্তি আওয়ামী লীগ সরকার পৌছে দিয়েছে। দারিদ্রের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে, সাক্ষরতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যােগাযােগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ায় বেকারত্বের সংখ্যাও কমেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে দেশবাসী মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে রাষ্ট্র পরিচালনার এবং বিরােধী দলে অবস্থান নেয়ার দায়িত্ব দিলে, এই দেশটা সত্যিকারেই বঙ্গবন্ধুর ‘নাের বাংলায় পরিণত হবে। সরকারও দুবৃর্ত-দুর্নীতিবাজ দমনে একাত্তরের ও পঁচাত্তরের ঘাতক-দালালদের নির্মূলে সাহসিকতা দেখাবে। দেশ থেকে অপরাজনীতিও তখন উপে যাবে। তারা হবে তারা হবে চিরতরে ধ্বংস।