দেশ সমাজ পরিপার্শ্ব আর বাস্তবতার কাছে সমর্পিত। মানুষের মন আর মনস্তত্ত্বের গল্প লেখেন মাহবুব আজীজ-তিনি লেখেন মানুষের সামূহিক উত্তরণের আকাঙ্ক্ষার গল্প। তার গল্প আখ্যানে বাষ্ময় হয় জীবনকে তিল-তিল করে উপভােগ আর উপলব্ধির বাসনা। তার গল্পের মানুষেরা কখনাে দুর্মর স্বপ্ন আর সংগ্রামে হয় আন্দোলিত, কখনাে ডুব দেয় তারা অতল নৈঃসঙ্গ্য-অর্ণবে, কখনাে হাবুডুবু খায় প্রেমসলিলে, আবার কখনাে-বা সাহসে-দ্রোহে হয়ে ওঠে রক্তমুখী। দুর্বার সৈনিক। মাহবুব আজীজের গল্পে চরিত্রদের অন্তর্লোকে সর্বদাই ধ্বনিত হয় এক ধরনের নৈর্ব্যক্তিক আর্তনাদ, কান-পাতলেই শােনা যায় কোনাে এক মিনহাজ, জহর আলী কি মায়া অথবা নিশির তীব্র নীরব অশ্রুপাতধ্বনি।। সমকালের নানামাত্রিক আলােড়ন-আন্দোলন মাহবুব আজীজের আখ্যানে নিপুণ বিন্যাসে হয়ে ওঠে চিরকালীন। সম্পদ—এখানেই ছােটগল্পকার হিসেবে তার সার্থকতা। শৈল্পিক নিরাসক্তিতে মাহবুব আজীজ অনায়াসে প্রবেশ করেন বিশেষ কোনাে চরিত্রের মনােলােকে এবং সেখান থেকে তুলে আনেন মানুষের অকহনীয় যন্ত্রণাপাথর। এই নৈর্ব্যক্তিকতাই তার গল্পকে এনে দেয় কালােত্তীর্ণ মহিমা। মাহবুব আজীজের ছােটগল্পের ভাষা মনােময় আবেগশাসিত ভাস্কর্যপ্রতিম এবং একই সঙ্গে প্রাতিস্বিকতা-চিহ্নিত। শব্দকে। নিয়ে খেলা করেন মাহবুব আজীজ এবং অনায়াসেই তিনি। সাজিয়ে তােলেন তার ছােটগল্পের শরীর। বাংলা মননশীল কথাসাহিত্যে মাহবুব আজীজ অনিবার্য হয়ে থাকবেন বলে আমাদের ধারণা।